[ অনলাইন ] 16/04/2024
 
রেমিট্যান্সের সিংহভাগ আসে ঢাকা বিভাগের ব্যাংকের শাখায়
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের সিংহভাগ আসে ঢাকা বিভাগের ব্যাংকগুলোর শাখায়। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ১ হাজার ৭০৭ কোটি ডলার পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগের প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৮৩১ কোটি ডলার। প্রবাসী আয় আসার ক্ষেত্রে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম।

আর চট্টগ্রামের পেছনেই রয়েছে সিলেট ও কুমিল্লা। এরপরই দেশের অন্যতম জেলা নোয়াখালীসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদী জেলার অবস্থান। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ের তথ্য বিশ্লেষণে রেমিট্যান্সের এমন চিত্র পাওয়া যায়।

দেশে দীর্ঘ সময় ধরে চলছে ডলার সংকট। এমন পরিস্থিতির মধ্যে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরও গত বছরের বেশির ভাগ সময় বৈধ পথে প্রবাসী আয় কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি। ব্যাংকগুলো অবশ্য এখন সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি নিজেরাও সমপরিমাণ প্রণোদনা দিচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-মার্চ মাসে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৭০৭ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত মার্চ মাসে তাঁরা পাঠান ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। আলোচ্য এই সময়ের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮৩১ কোটি ডলার ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৭৯ কোটি ডলার প্রবাসী আয় আসে। একই সময়ে সিলেট বিভাগে ১৮৮ কোটি এবং খুলনা বিভাগে ৬৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এরপরের তালিকায় রয়েছে রাজশাহী বিভাগ, বরিশাল বিভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগ ও রংপুর বিভাগ।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী-অধ্যুষিত বিভাগগুলোতে যে পরিমাণ আয় আসছে, তার চেয়ে বেশি আসার কথা। কিন্তু অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়ে গেছেন, সে কারণে তা হচ্ছে না। তাঁরা বরং উল্টো দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন এবং এতে অর্থ পাচার বাড়ছে।

গত বছরের বেশির ভাগ সময়ে প্রবাসী আয় পরিস্থিতি খুব আশাপ্রদ ছিল না। শেষ দিকে এসে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করে। যেমন গত ডিসেম্বরে দেশে প্রবাসী আয় আসে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, যা নভেম্বরে ছিল ১৯৩ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে ২০২৩ সালে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২ হাজার ১৯০ কোটি ডলার। তার আগে ২০২২ সালে এসেছিল ২ হাজার ১৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল প্রায় ৩ শতাংশ। এর আগে ২০২১ সালে ২ হাজার ২০৭ কোটি ডলার, ২০২০ সালে ২ হাজার ১৭৩ কোটি ডলার এবং ২০১৯ সালে ১ হাজার ৮৩৩ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল দেশে।

প্রবাসী আয় কেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোয় এখন ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ১১০ টাকা। তবে ডলার-সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো এর চেয়ে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনছে। এ কারণে বৈধ পথে প্রবাসী আয় বাড়ছে। ডলারের জোগান ও চাহিদার ওপর নির্ভর করে সময়-সময় বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে আসছে।