[ অনলাইন ] 25/04/2024
 
দুদক কী না পারে!
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কী না পারে? দিনকে রাত করতে পারে। রাতকে করতে পারে দিন। ২ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের হাতে যেমন হাতকড়া পরাতে পারে। আবার ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটকারীদের ছেড়েও দিতে পারে। পারে নিরপরাধ জাহালমকে কারাগারে নিতে। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত করার অপরাধে (?) শরীফউদ্দিনের চাকরি খেতে পারে। যে নজির ইতিপূর্বে স্থাপিত হয়নি-স্থাপন করতে পারে এমন নজিরও। সরকারের ৬ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা রুজুর অনুমোদন দিয়েছিলো এই দুদক। আসামি করা হয়, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেকসহ ১৩ জনকে। ঘটনাটি ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরের। গোলাম সাদেক ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন, প্রতিষ্ঠানটির সদস্য মো: দেলোয়ার হোসেন, ২ পরিচালক আবু জাফর হাওলাদার, ওয়াকিল নওয়াজ, অতিরিক্ত পরিচালক সাইফুল, যুগ্ম-পরিচালক জুলফা খানম, উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, তৎকালীন তিন উপ-পরিচালক সেলিম রেজা, কবির হোসেন, মাসুদ পারভেজ, ঘাটের ইজারাদার এজাজ আহমেদ সোহাগ, সাইফ আহমেদ ইমন এবং রফিকুল ইসলাম খান।

অনুমোদিত এজাহারের তথ্য মতে, আরিচার নগরবাড়ি, কাজিরহাট, নরাদহ নদী বন্দরে ইজারা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। ২০২০-২১ এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরে দুর্নীতির মাধ্যমে ইজারা দিয়ে ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার ও পরস্পর যোগসাজশে সরকারের এই আর্থিক ক্ষতি সাধন করে। দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের ২ নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত দেন কমিশন।

সাধারণত মামলা অনুমোদনের পরপরই বিধি অনুযায়ী নিজ কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের কেউ একজন বাদী হয়ে দায়ের করে মামলা। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা যায় কেবল এয়ার কমোডর গোলাম সাদেককে আসামি করে অনুমোদিত মামলার ক্ষেত্রে। দিনের পর সপ্তাহ। সপ্তাহের পর মাস, বছর গেলেও ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কমিশন অনুমোদিত মামলাটি আর রুজু হয় না। কী এক অদৃশ্য সুতোর টানে কমিশন হঠাৎই যেন স্তব্ধ, নিথর ও বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। ‘কেন মামলা দায়ের হচ্ছে না’ এমন প্রশ্ন দুদকের কর্তাব্যক্তিদের কাছে গেলো দু’বছরে একাধিকবার করা হয়। কিন্তু কখনো কোনা জবাব মেলেনি। বরাবরের মতোই এড়িয়ে যাওয়া হয়েছ। তবে সম্প্রতি জানাগেলো এই উত্তর। অনুমোদিত মামলাটি কমিশন দায়ের না করেই দিয়েছে চূড়ান্ত রিপোর্ট। দুদকের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।