[ অনলাইন ] 25/04/2024
 
খেলাপি ঋণ কমানোর পদক্ষেপ জানতে চায় আইএমএফ
দেশের ব্যাংক খাত ভুগছে নানা সংকটে। এর মধ্যে অন্যতম একটি বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা বেধে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক কি ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে আজ এক বৈঠকে জানতে চেয়েছে  আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাটি।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ব্যাংক খাত সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে। খাতটির টালমাটাল এই পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছে আইএমএফ’র একটি প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর গড় খেলাপি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কি ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে জানতে চেয়েছে আইএমএফ।

ইতিমধ্যে আইএমএফ’র ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড়ে রিজার্ভের বেধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণে বারবার ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে সুদের হার বাস্তবায়ন, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা এবং বাজার ভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় চালু করার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ।

আইএমএফ’র দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলোই পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রা বিনিময়ে চাপিয়ে দেওয়া দরের কারণেই দেশের আর্থিক হিসাব ঋণাত্মক ও রিজার্ভে পতন অব্যহত রয়েছে বলে মনে করে সংস্থাটি।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের বিদেশি বাণিজ্যের স্থিতিশীলতা, রিজার্ভ সংরক্ষণ ও খেলাপি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কি ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে আইএমএফ। পাশাপাশি বাজার ভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার ও সুদের হার বাস্তবায়নে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়েও জানতে চেয়েছে সংস্থাটি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মুদ্রা বিনিময় ও ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন নিয়ে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ায় ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন নিয়ে আপাতত কোনো পরামর্শ দেয়নি বাংলাদেশে অবস্থানরত আইএমএফের প্রতিনিধি দল।

বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আর্থিক খাত সংস্কার, খেলাপি ঋণ, সুদের হার বাস্তবায়ন, মুদ্রানীতি, মূল্যস্ফীতি, বিদেশি বাণিজ্যের ভারসাম্য ও আউটলুক, মুদ্রা বাজার ও তারল্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেছে আইএমএফ।

তিনি আরও বলেন, আইএমএফের মিশনের সাথে বুধবার (২৪ এপ্রিল) আমাদের বৈঠক শুরু হয়েছে। এখন সংস্থাটি আমাদের কাছ থেকে বিশ্লেষণ করার জন্য তথ্যগুলো সংগ্রহ করছে। এরপর হয়তো বিভিন্ন ধরণের পরামর্শ দিবে।

খেলাপি ঋণ কমানোর পাশাপাশি দেশে স্মার্ট সুদের হার বাস্তবায়নের ফলে অর্থনীতিতে কি ধরণের প্রভাব পড়েছে সে বিষয়েও তথ্য চেয়েছে। এছাড়া বিদেশি বাণিজ্যের স্থিতিশীলতা, রিজার্ভ সংরক্ষণ, মুদ্রানীতি কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে সে সব বিষয়েও তথ্য চাওয়া হয়েছে।