[ পাতা ২ ] 26/04/2024
 
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ
পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বাধীনভাবে প্রবেশের সুযোগ ছিল গণমাধ্যম কর্মীদের। কিন্তু এক মাস ধরে এ সুযোগ একেবারেই সীমিত করে দেয়া হয়েছে। অলিখিত নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিতে আগের মতো প্রবেশ করতে পারছেন না সাংবাদিকরা। এ পরিস্থিতির অবসান চেয়ে গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের অর্ধশতাধিক সাংবাদিক এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচি চলাকালে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অর্থনীতি বিষয়ক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। ঘণ্টাব্যাপী আলোচনার পরও বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে প্রবেশের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি।

বৈঠক শেষে রেফায়েত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবাধ তথ্যপ্রবাহে বাধা হয় এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে গভর্নরকে অনুরোধ করেছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সঠিক তথ্য আদান-প্রদানের অন্তরায়। আমরা গভর্নরকে বলেছি, আগের মতো সাংবাদিকদের অবাধ প্রবেশাধিকার দিতে হবে।’

আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সব ভবনের নিচতলায় অভ্যর্থনা বিভাগে রাখা রেজিস্ট্রার বইয়ে পরিচয় লিখে সই করে বিশেষ ‘পাস’ নিয়ে সাংবাদিকরা ভেতরে যেতে পারতেন। অস্থায়ী এ পাস বের হওয়ার সময় ফেরত দিতে হতো। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই এ রীতির চর্চা ছিল। কিন্তু গত এক মাস কোনো ঘোষণা ছাড়াই অস্থায়ী এ পাস ইস্যু করা বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম কর্মীরা বাধার মুখে পড়ছেন।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে সাংবাদিকরা ব্যাংকের অস্থায়ী পাস নিয়ে শুধু মুখপাত্রের কাছে যেতে পারবেন। কোনো কর্মকর্তা যদি সাংবাদিকদের পাস দেন, সেক্ষেত্রে তারা শুধু সেই কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। আগের মতো সাংবাদিকরা অবাধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো বিভাগে প্রবেশ করতে পারবেন না।’

গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে গতকাল ইআরএফের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ‘গত ৫৩ বছর ধরে রিপোর্টাররা অবাধে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। এতে কখনো তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। হঠাৎ করে রিপোর্টারদের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করায় ব্যাংকিং খাত নিয়ে ভুল রিপোর্টিংয়ের আশঙ্কা বাড়ছে, যা কোনো পক্ষেরই কাম্য নয়।’

বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধাহীন প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে করণীয় নির্ধারণে ইআরএফ সভাপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সংগঠনটি পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।