[ অনলাইন ] 26/04/2024
 
ডলারে ‘ক্রলিং পেগ’ বাস্তবায়নে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ডলারের টালমাটাল অবস্থা ঠেকাতে অবশেষে মন্দের ভালো হিসেবে পুরনো পদ্ধতি ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফের বৈঠকে বেশ কিছু আলোচনা হয়। এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব গভর্নরের ওপর ছেড়ে দিয়েছে সংস্থাটি।

ক্রলিং পেগ হচ্ছে দেশীয় মুদ্রার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে একটি মুদ্রার বিনিময় হারকে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করার অনুমতি দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে মুদ্রার দরের একটি সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন সীমা নির্ধারণ করা থাকে। এটি বেশ পুরনো একটি মডেল, যা আশির দশকে চালু হয়। সাধারণ যেসব দেশের বৈদেশিক মুদ্রা খারাপ অবস্থায় থাকে সেসব দেশে ক্রলিং পেগ বাস্তবায়ন করা হয়। বর্তমানে কিছুসংখ্যক দেশে তা চালু থাকলেও বাস্তবায়ন নেই বলে জানা যায়।

বৈঠক সূত্র জানায়, ক্রলিং পেগ চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ও সফররত আইএমএফের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা নানা পর্যালোচনা ও যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরিশেষে তারা প্রাথমিকভাবে চালুর জন্য গভর্নরের ওপর দায়িত্বভার ছেড়ে দেন। গভর্নর সরকারের সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে আগামী অর্থবছর থেকে ক্রলিং পেগ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন।

এ বিষয়ে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ডলার সংকট এখনো রয়ে গেছে। এর পেছনে বড় কারণ হলো ডলারের রেট বাজারভিত্তিক না করা বা বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা। এমন পরিস্থিতিতে অনেক পুরাতন মডেল হলো ক্রলিং পেগ পদ্ধতি সাময়িক সমাধান হতে পারে। তবে এটি কোনো টেকসই বা স্থায়ী সমাধান নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক গায়ের জোরে ডলারের দাম নির্ধারণ করলেও একটা পর্যায়ে বাজারের ওপরই ছেড়ে দিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় উঠে এসেছে, গেল বুধবার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাবে তা ১৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। এটি অবশ্য প্রকৃত রিজার্ভ নয়। আর প্রকৃত ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলার আর বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারিতে গড় আমদানি ব্যয় ছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ৫ দশমিক ২০ বিলিয়ন এবং মার্চে ৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার।