[ অনলাইন ] 2025-02-05 |
|
|
|
|
এক যুগ ভ্যাট দিচ্ছে না চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বকেয়া ৪৬৭ কোটি টাকা
|
|
|
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) ৪৬৭ কোটি টাকার নিরঙ্কুশ বকেয়া পাওনা রয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় এক যুগ ধরে জমা এ বিপুল অর্থ পরিশোধ করছে না। বিভিন্ন সেবার বিপরীতে ওই ভ্যাট আদায়ে জোর দেয়া হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা বকেয়া রয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এ অর্থ আদায়ে বারবার তাগাদা দিলেও তা পরিশোধ করা হয়নি।
নিরঙ্কুশ বকেয়া কী, এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর সদস্য (ভ্যাট নীতি) ড. মো. আব্দুর রউফ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যে বকেয়ার বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই, অর্থাৎ মামলা-মোকদ্দমা, আপিল শেষ হয়েছে, সেটি হলো নিরঙ্কুশ বকেয়া। ভ্যাট আইনে নিরঙ্কুশ বকেয়া আদায় করার জন্য অনেক ব্যবস্থা আছে। বকেয়া আদায়ের জন্য প্রতি কমিশনারেটে এক বা একাধিক বকেয়া আদায় কর্মকর্তা অ্যাসাইন করা থাকে। তিনি বকেয়া আদায় কার্যক্রম পরিচালনা করেন।’
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন সেবা খাতের বিপরীতে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে খাতওয়ারি নিরীক্ষা করে অপরিশোধিত ৭৬ কোটি ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকার ভ্যাট বকেয়া থাকার তথ্য উদ্ঘাটন করে চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। একই পদ্ধতিতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৮৬ কোটি ৫৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকার ভ্যাট বকেয়া থাকার তথ্য উদ্ঘাটন করা হয়। চূড়ান্ত দাবি করা টাকা পরিশোধ করতে একাধিকবার তাগিদপত্রও দেয়া হয়। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই টাকা এখনো পরিশোধ করেনি।
এছাড়া ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর (ভ্যাট গোয়েন্দা) নিরীক্ষা করে আরো ৩০৪ কোটি ৯৯ লাখ ২৮ হাজার টাকার অপরিশোধিত ভ্যাটের তথ্য উদ্ঘাটন করে। তিনটি চূড়ান্ত দাবিনামার মাধ্যমে মোট ৪৬৭ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে পরিশোধ করতে অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই টাকা পরিশোধ না করে দাবিনামা প্রত্যাহারের জন্য ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আবেদন করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে বকেয়া রাজস্ব মওকুফের আবেদন নাকচ করে তা পরিশোধের জন্য অনুরোধ করে। এরপর বিভাগীয় দপ্তর থেকে ২০২৪ সালের ১২ মার্চ দ্বিতীয় নোটিস এবং সদর দপ্তর থেকে গত ১৪ মে শেষ নোটিস জারি করা হয়। বিষয়টি সুরাহা করার লক্ষ্যে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বানের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গত ৬ সেপ্টেম্বর নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জানান।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যেসব নির্দিষ্ট সেবায় ভ্যাট প্রযোজ্য ছিল, সেসব ক্ষেত্রে বন্দর নিয়মিতই ভ্যাট পরিশোধ করেছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সব ধরনের সেবায় ভ্যাট দেয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে বন্দরের পক্ষ থেকেও যুক্তি তুলে ধরা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি এনবিআর থেকে এ-সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমরা পাইনি।’ |