[ পাতা ১৩ ] 2025-02-05 |
|
|
|
|
ভিসা–জটিলতায় দুবাই মেলায় ৪১ প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত
|
|
|
ভিসা–জটিলতায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় ‘গালফ ফুড ফেয়ার’ শীর্ষক মেলায় বাংলাদেশের ৪১টি প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের রপ্তানি ক্রয়াদেশও কমার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
১৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচ দিনব্যাপী এই গালফ ফুড ফেয়ার শুরু হবে। এতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ব্যবস্থাপনায় ৩২৪ বর্গমিটার আয়তনের প্যাভিলিয়ন বাংলাদেশ থাকবে। প্যাভিলিয়নে বুথ পাওয়া ৪১টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটিই ৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে ইপিবিতে জমা দিয়েছে। বুথের ৩০ শতাংশ অর্থ অবশ্য ভর্তুকি হিসেবে দেবে ইপিবি।
গালফ ফুড ফেয়ারে অংশ নিতে চান, এমন একাধিক ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে গত জুলাইয়ে দুবাইয়ের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ করেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তার পরপরই বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করে ইউএই। সে জন্য অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ পাননি ব্যবসায়ীরা। পরে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) নেতারা বিষয়টি ইপিবিকে লিখিতভাবে জানায়। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাইতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে ইপিবি। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের দুবাই দূতাবাস আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আয়োজকদের পরামর্শে তাদের এক এজেন্টের মাধ্যমে ভিসার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ জন্য ইপিবি মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে লিখিত বন্ডও নেওয়া হয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এলওআই (লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন) দেয়। তা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত ভিসা মেলেনি।
জানতে চাইলে বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক গত সোমবার বলেন, ‘আমরা এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা ই–মেইলে জানিয়েছে, এম্বাসি এখনো সাড়া দেয়নি।’
জানা যায়, এবারের গালফ ফুড ফেয়ারে ইস্পাহানি ফুডস, হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো, প্রাণ ফুডস, কিষোয়ান স্ন্যাকস, বনফুল অ্যান্ড কোম্পানি, ফুলকলি ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বম্বে সুইটস, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, আকিজ এসেনশিয়াল, হিফস অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ, ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টস, এসিআই ফুডস, বসুন্ধরা মাল্টি ফুডস প্রোডাক্টস ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়ার কথা ছিল।
হিফস অ্যাগ্রো ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের সিইও ছৈয়দ মুহাম্মদ সোয়াইব হাছান প্রথম আলোকে বলেন, গালফ ফুড ফেয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মেলা। কারণ, এখানে শুধু ব্যবসায়ীরাই আসেন। বাংলাদেশের কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতের রপ্তানি যতটা এগিয়েছে, তার অনেকটাই এই মেলার অবদান।
২০২৩ সালে গালফ ফুড ফেয়ারে অংশ নেয় খাদ্য উৎপাদন, বিপণন ও পরিবেশনের সঙ্গে যুক্ত ১২০টি দেশের প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বাংলাদেশের ছিল ৩৯টি প্রতিষ্ঠান। ওই বছর ১ কোটি ৪১ লাখ ডলারের তাৎক্ষণিক ক্রয়াদেশ পেয়েছিল প্রতিষ্ঠানগুলো। পরে আলাপ–আলোচনার ভিত্তিতে বিপুল ক্রয়াদেশ পেয়েছিল তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ভিসা–জটিলতার বিষয়টি সমাধান করা উচিত। যত দেরি হবে, তত আমাদের খরচ বাড়বে।’
জানতে চাইলে ইপিবির উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম গত সোমবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভিসার বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য মঙ্গলবার জানা যাবে বলে জানান তিনি।
|