[ পাতা ৯ ] 2025-04-18
 
সিপিডির সংলাপে তথ্য
তিন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধায় রাজস্ব ক্ষতি হবে ১৭ কোটি ডলার
 
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি করে যে শুল্ক আদায় করে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যে তার চেয়ে ৭ গুণ বেশি শুল্ক আদায় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই হিসাব গত বছরের। শুধু তা–ই নয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানিতে গড় শুল্ক ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে গড় শুল্কহার ১৫ দশমিক ১ শতাংশ।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশে প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া নিয়ে আয়োজিত সংলাপে মূল প্রবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরেন সংস্থাটির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত এই সংলাপ সঞ্চালনা করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ২৯১ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। তার মধ্যে ৭৫ কোটি ডলারের পণ্য শুল্কমুক্ত–সুবিধায় এসেছে। বাকি ২১৬ কোটি ডলারের বিপরীতে ১৮ কোটি ডলার শুল্ক আদায় হয়েছে। তার বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্যে ১২৭ কোটি ডলারের শুল্ক আদায় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর দেশটিতে ৮৪৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা। এর মধ্যে ৪০ কোটি ডলারের পণ্য শুল্কমুক্ত–সুবিধা পেয়েছে। বাকি ৮০৫ কোটি ডলারের পণ্যে শুল্ক দিতে হয়েছে।

২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। তাতে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক দাঁড়ায় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল তিন মাসের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করেন। যদিও ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক সব দেশের পণ্যের ওপর কার্যকর করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

পাল্টা শুল্ক আরোপের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চিঠি দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) জেমিসন গ্রিয়ারের কাছে এক চিঠি পাঠিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক নেই। এর বাইরে আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আমদানি হওয়া তিন শ্রেণির পণ্য (স্ক্র্যাপ, এলপিজির উপাদান বিউটেনস ও প্রোপেন) থেকে গত বছর ৬ কোটি ১৬ লাখ ডলার শুল্ক আদায় হয়েছে। এখন এসব পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্কমুক্ত–সুবিধা দিতে হলে অন্য দেশের জন্যও সেটি করতে হবে। তাতে বাংলাদেশের মোট ১৬ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ক্ষতি হবে, যা দেশীয় মুদ্রায় ২ হাজার ৫০ কোটি টাকার সমান।

এ ধরনের রাজস্ব ক্ষতি এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা এফটিএ করার পরামর্শ দিয়েছে মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোস্টারিকা, ডমিনিকান রিপাবলিক, বাহরাইন, জর্ডানসহ বিভিন্ন দেশের এফটিএ করেছে। এই দেশগুলো যে উন্নত দেশ, তা–ও নয়। ফলে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এফটিএ করতে এগোতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এফটিএ করলে বাংলাদেশ লাভবান হবে, যেটি ভারত ও চীনের সঙ্গে করলে হবে না।

পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে চীন থেকে তৈরি পোশাকের ব্যবসা বাংলাদেশে আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের কৃত্রিম তন্তুর পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানিতে বেশ পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
Print Close  
Print Close  
No link found
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved