ভারতের সুতা আমদানি বন্ধের প্রজ্ঞাপনের নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের নতুন ব্যাখ্যা অনুসারে, ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানির জন্য যাঁরা ঋণপত্র খুলেছেন, তাঁরা আগের মতো স্থলবন্দর দিয়ে ওই সুতার চালান খালাস করতে পারবেন। এমনকি ১৩ এপ্রিল বা এর আগে যাঁরা এ-সংক্রান্ত ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, তাঁরাও একই সুবিধা পাবেন।

গত বুধবার এনবিআর এ-সংক্রান্ত নতুন আদেশ জারি করেছে।

এর আগে ১৩ এপ্রিল অপর এক প্রজ্ঞাপনে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে এনবিআর। যাঁরা ১৩ এপ্রিল বা এর আগে ঋণপত্র খুলেছিলেন, তাঁরা কী করবেন—এ নিয়ে মাঠপর্যায়ে অস্পষ্টতা দেখা দেয়। সেই অস্পষ্টতা দূর করতে নতুন ব্যাখ্যা দিল এনবিআরের শুল্ক বিভাগ।

এনবিআরের নতুন আদেশে বলা হয়েছে, যেসব আমদানিকারক ১৩ এপ্রিল বা এর আগে সুতা আমদানির ঋণপত্র স্থাপন করেছেন বা ওই তারিখের আগে সুতা আমদানির ঋণপত্র সংশোধন করেছেন, সেসব ঋণপত্রের পণ্য চালান ওই প্রজ্ঞাপনের (১৩ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপন) আওতায় পড়বে না।

স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছিলেন দেশীয় স্পিনিং মিলমালিকেরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাস আগে সরকার এ বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু করে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। অবশ্য এই অনুরোধ করার আগে বিটিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিল ট্যারিফ কমিশন।

ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইলশিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্ত-সংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করাসংক্রান্ত আদেশ জারি করেন।