[ অনলাইন ] 2025-05-09 |
|
|
|
|
৭ মাস পর বেসরকারি ঋণে প্রবৃদ্ধি
|
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি মার্চে বেড়ে হয় ৭.৫৭% ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৬.৮২% এই প্রবৃদ্ধি গেল ৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ |
|
সাত মাস পর বেড়েছে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি। গত বছরের আগস্ট মাস থেকে ক্রমাগতভাবে কমতে থাকা বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ফেব্রুয়ারিতে ৬.৮২ শতাংশে নামে। তবে মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৫৭ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি গেল চার মাসের সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ২১ বছরের সর্বনিম্ন ৬.৮২ শতাংশে নেমে এসেছিল। মার্চের পরিসংখ্যানে ০.৭৫ শতাংশ পয়েন্টের উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যাচ্ছে, যা প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার সমতুল্য।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের মার্চে বেসরকারি খাতের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা। তবে চলতি বছরের মার্চে তা ১৭ লাখ ১৯ হাজার ৫১২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
ব্যাংকাররা বলছেন, রমজান মাসজুড়ে প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি চাহিদা বৃদ্ধির জন্য এই প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। কিছু ব্যাংককে দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি মুদ্রার ঋণকে স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তর করতে হয়েছিল, যা জোরপূর্বক ঋণ বা ফোর্স লোন নামে পরিচিত। এটাও ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নের মুখোমুখি হয়েছে, যার ফলে সাত মাস ধরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের নভেম্বরে থেকে বেসরকারি খাতের ঋণের পতন শুরু হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তা আরো খারাপ হয়ে ওঠে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.১৫ শতাংশ, ডিসেম্বরে ৭.২৮ শতাংশ, নভেম্বরে ৭.৬৬ শতাংশ, অক্টোবরে ৮.৩ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৯.২ শতাংশ, আগস্টে ৯.৮৬ শতাংশ, জুলাইয়ে ১০.১৩ শতাংশ এবং ২০২৪ সালের জুনে ৯.৮৪ শতাংশ ছিল।
মার্চ মাসে ঋণ বিতরণের হার কিছুটা বাড়লে ব্যাংকিং খাতে চলমান চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক; যার মধ্যে রয়েছে খেলাপি ঋণের উল্লম্ফন, সামগ্রিক ঋণ প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি, মূলধন ঘাটতি ইত্যাদি। এগুলোর সবই ব্যাংকের নতুন ঋণ দেওয়ার ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে সীমিত করে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট খেলাপি ঋণ ২১.৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। দুই লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা থেকে রেকর্ড তিন লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জানুয়ারিতে ঘোষিত মুদ্রানীতিতে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯.৮ শতাংশ। কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন মার্চ মাসে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির মূল কারণ রমজানের আগে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি। তাঁরা বলেছেন, রমজান মাসে সাধারণত ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুরের আমদানি বৃদ্ধি পায়, যা মার্চ মাসে উচ্চ ঋণ প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির আরেকটি কারণ ছিল চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলমের বেশ কয়েকটি বকেয়া বিদেশি ঋণ স্থানীয় মুদ্রায় জোরপূর্বক ঋণে রূপান্তর করতে হয়েছে, যা ঋণ প্রবৃদ্ধিকেও ত্বরান্বিত করেছে। |