[ অনলাইন ] 2025-05-09
 
বিনিয়োগে মুখিয়ে বিদেশিরা খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার
চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন
 
দেশের অর্থনীতির স্বর্ণদ্বার খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর প্রায় সব খাতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হচ্ছে। বিশেষ করে কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং, জাহাজের গড় অবস্থান সময় এবং রাজস্ব আহরণ। বড় অগ্রগতি হয়েছে বে-টার্মিনাল, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই দেশের হয়ে প্রায় ৯২ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্য হয়। তবে দেশের অর্থনীতিতে এই বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও নানা সম্ভাবনা সত্ত্বেও পিছিয়ে রয়েছে বিশ্ব প্রতিযোগিতায়। এর পেছনে রয়েছে উন্নত সরঞ্জাম সংকট, অর্থনৈতিক সক্ষমতা, অভিজ্ঞ লোকবল সংকটের মতো অনেক কারণ। তবে আশার খবর, বৈশ্বিক তালিকায় পিছিয়ে থাকা এই বন্দরকে এগিয়ে নিতে আগ্রহের কমতি নেই বিদেশিদের। অপ্রত্যাশিত বিনিয়োগ করতে একে একে লাইন ধরছে তারা।

অন্যদিকে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খোলা চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে প্রাণান্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের লালদিয়া টার্মিনাল, বে-টার্মিনাল, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ বন্দরের বেশকিছু অপারেশনাল এলাকা পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। এসব টার্মিনালের সংকট-সম্ভাবনাগুলো তিনি ঘুরে দেখেন। কথা বলেন ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও। বন্দর পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রামের র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন নিয়ে এক মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়।

২০২৪ সালে লালদিয়া টার্মিনালে কার্যক্রম শুরু করে এপিএম টার্মিনালস। শুরুতে ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা থাকলেও গতকাল বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানিয়েছেন, বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়িয়ে ৮০০ মিলিয়ন ডলার করা হয়েছে। এপি মোলার মায়ের্স্কের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালস বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ও সরকার-থেকে-সরকার ভিত্তিতে (বিওটি) বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার পদ্ধতিতে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং নেদারল্যান্ডসের এপিএম টার্মিনালস চট্টগ্রামের লালদিয়ার চরে ৮০০ মিলিয়ন ডলারের পরিবেশবান্ধব গ্রিন পোর্ট নির্মাণে আগ্রহ দেখিয়েছে। পাশাপাশি আনোয়ারায় ৪০০ একর জমিতে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা এগোচ্ছে, যা বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে। বে-টার্মিনাল চালু হলে বছরে ৩৫ লাখ কনটেইনার পরিচালনার সক্ষমতা অর্জনের পাশাপাশি ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের লং টার্ম অ্যাম্বিশন যেটা, বাংলাদেশকে আমরা গ্লোবাল ফ্যাক্টরি বানাতে চাই। সেটার সবচেয়ে প্রাইমারি ফ্যাক্টর বা সবচেয়ে বড় ইনগ্রেডিয়েন্ট হচ্ছে পোর্ট ক্যাপাসিটি। পোর্ট ক্যাপাসিটি না থাকলে আপনি কিছু করতে পারবেন না।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, বে-টার্মিনালে তিনটি টার্মিনাল হবে। দুটি কনটেইনার টার্মিনাল এবং একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল। সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে বে-টার্মিনালে। এটাই হবে আসল সমুদ্রবন্দর।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ড. ইউনূসের লক্ষ্য হচ্ছে কীভাবে দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। তিনি বাংলাদেশকে একটি গ্লোবাল ফ্যাক্টরি হিসেবে গড়ে তুলতে চান, যাতে প্রবাসে কাজ করতে যাওয়া মানুষ নিজ দেশে থেকেই আয় করতে পারে। ড. ইউনূস ২০০৭-০৮ সাল থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে চিন্তাভাবনা করে আসছেন।
Print Close  
Print Close  
News Source
            Top
            Top
 
Home / About Us / Benifits /Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2009-2010, Allright Reserved