[ অনলাইন ] 16/07/2025 |
|
|
|
বাজার থেকে আরো ৩৩ কোটি ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক |
 |
|
ডলারের দর ধরে রাখতে বাজার থেকে গতকাল আরো ৩৩ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৫০ পয়সা। নিলাম কমিটির সিদ্ধান্তে দেশের ২২টি ব্যাংক থেকে এ ডলার কেনা হয়েছে।
ডলারের দর ধরে রাখতে বাজার থেকে গতকাল আরো ৩৩ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্ষেত্রে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৫০ পয়সা। নিলাম কমিটির সিদ্ধান্তে দেশের ২২টি ব্যাংক থেকে এ ডলার কেনা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার বাজার থেকে ১৭১ মিলিয়ন বা ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে বাজার থেকে ৫০ কোটি ২০ লাখ ডলার কিনল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার থেকে কিনে নেয়া এসব ডলার দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে যুক্ত হচ্ছে।
সাড়ে তিন বছর ধরে ডলারের বিপরীতে টাকার ধারাবাহিক অবমূল্যায়ন হয়েছে। ব্যাংক খাতে প্রতি ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ৮৫ থেকে বেড়ে ১২৩ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। কোনো কোনো ব্যাংক এর আগে রেমিট্যান্সের ডলার ১২৫ টাকায়ও কিনেছে। কিন্তু চলতি জুলাইয়ে এসে ডলারের দর না বেড়ে উল্টো কমতে শুরু করেছে।
২ জুলাই ব্যাংক খাতে প্রতি ডলারের বিক্রয় মূল্য ছিল ১২২ টাকা ৮৫ পয়সা। এর পর থেকেই ডলারের বিপরীতে টাকা শক্তিশালী হচ্ছিল। চারদিনের ব্যবধানে ডলারের দর ১১৯ টাকায় নেমে যায়। এ পরিস্থিতিতে ডলারের আরো দরপতন ঠেকাতে গতকাল বাজার থেকে ডলার কেনা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। চলতি মাসেও রেমিট্যান্সের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ অবস্থায় ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকলে রেমিট্যান্স প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স কমে গেলে হুন্ডির বাজার আবারো চাঙ্গা হয়ে উঠবে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক আপাতত ডলারের দর স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বণিক বার্তাকে বলেন, ব্যাংকগুলোর ঘোষিত দরের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিন ডলারের একটি মধ্যবর্তী দর (মিডরেট) নির্ধারণ করে। মধ্যবর্তী দর থেকে ২ শতাংশ নিচে নেমে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনছে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কিছু নির্দেশনাও রয়েছে। সামগ্রিক পর্যালোচনার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার ৩৩১ মিলিয়ন (৩৩ কোটি ১০ লাখ) ডলার কিনেছে।
সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে ৩ হাজার ৩৩ কোটি বা ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্সের এ প্রবৃদ্ধি চলতি মাসেও অব্যাহত রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরুর মাস অর্থাৎ জুলাইয়ের প্রথম ১২ দিনেই প্রবাসীরা ১০৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। গত মাসে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকাসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশ সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণ সহায়তা পেয়েছে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে। অন্যদিকে, গত অর্থবছরে দেশে মূলধনি যন্ত্র আমদানি কমেছে ১৯ শতাংশ। এসব ঘটনার প্রভাবেই দেশে ডলারের বিনিময় হার কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে টাকা।
প্রসঙ্গত, দেশে ডলারের বাজারে অস্থিরতা চলছিল প্রায় চার বছর ধরে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দেশ প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৫ টাকা। এর পর থেকেই ডলারের বাজারে অস্থিরতা চরমে ওঠে। মাত্র এক বছর পর ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১০৩ টাকায় ঠেকে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি ডলারের দর ১১০ টাকায় উঠে যায়। ওই বছরের জুনে এসে বিনিময় হার নির্ধারণে ক্রলিং পেগ নীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন এক ধাক্কায় প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১১৮ টাকায় ঠেকে। আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি বিনিময় হার আরো বেড়ে ১২০ টাকায় স্থির হয়। আর বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার দিন তথা গত ১৪ মে ব্যাংক খাতে প্রতি ডলারের দর ছিল ১২২ টাকা। এরপর ডলারের দর ১২৩ টাকায়ও উঠেছিল।
তবে ২০২৩ সালের শেষের দিকে কার্ব মার্কেটে প্রতি ডলার ১৩০ টাকা পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। এরপর বিভিন্ন সময়ে এ বাজারে প্রতি ডলার ১২৬-১৩০ টাকায় ওঠানামা করে। এখন কার্ব মার্কেটে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১২২-১২৩ টাকায়। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
 |
|