Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
বাংলাদেশে নীতি সুদহার বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ [ অনলাইন ] 01/11/2024
বাংলাদেশে নীতি সুদহার বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আবারও নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করে, যা ২৭ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। এর আগে, ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর নীতি সুদহার ৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯.৫ শতাংশ করা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্চ সুদহার তাদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে ঋণের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ের সম্প্রসারণে বাধা সৃষ্টির মাধ্যমে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নীতি সুদহার বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের অন্যতম একটি উপায় হলেও এর পাশাপাশি অন্যান্য অর্থনৈতিক নীতি ও বাজার ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমও কঠোর ও সমন্বিতভাবে পরিচালনা করতে হবে। তা না হলে আগে থেকেই সংকটগ্রস্ত দেশীয় অর্থনীতি মন্দায় পড়তে পারে। এমনিতেই বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে অর্থের প্রবাহে লাগাম টেনে প্রায় দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করলেও মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চ পর্যায়েই রয়েছে। এর মানে হচ্ছে, নীতি সুদহার বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রথাগত পদ্ধতি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে খুব একটা কাজ করছে না, যা ১১ বার নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি অন্তত ২ শতাংশও কমাতে না পারাই প্রমাণ করছে।

২০২২ সালের মে মাসে নীতি সুদহার ছিল ৫ শতাংশ। সে সময় ২০২২-২৩ সালে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ০২ শতাংশ। এভাবে ২০২২ সালের মে মাস থেকে শুরু এখন পর্যন্ত মোট ১১ বার বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার। বাংলাদেশ পরিসংখান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতি এখনো ১০ শতাংশের আশপাশে। সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৪০ শতাংশে।
আমরা জানি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থনীতিতে মুদ্রা সরবরাহ হ্রাস-বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ ব্যাংক যখন নীতি সুদহার বাড়ায়, তখন ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ নেওয়ার খরচ বৃদ্ধি পায়, যা সাধারণ জনগণ ও ব্যবসার ওপর সুদের হার বাড়ায়। এতে করে ব্যক্তিগত ঋণ গ্রহণ এবং বিনিয়োগ কমে যায়, যার ফলে বাজারে অর্থের প্রবাহ হ্রাস পায়। সুদহার বৃদ্ধির ফলে বাজারে অর্থের প্রবাহ কমে গেলে চাহিদা কমে যায়।

চাহিদা কমার ফলে জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল বা হ্রাস পেতে থাকে, যা মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে উন্নত দেশের নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হলেও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এই পদ্ধতির ব্যবহারে সফলতা অর্জন বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সুদহার বৃদ্ধির ফলে পরপর দুই মাস বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য করে কমলেও তা এখনো সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, গত সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ সময় খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশে, যা আগস্টে ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশ ছিল।

এমনিতে সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়। সাধারণত নীতি সুদহার বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসতে অন্তত একবছর প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাংলাদেশে গত দুই বছর ধরে ক্রমাগত নীতি সুদহার বৃদ্ধি হলেও মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে আসা তো দূরের কথা, বরং বাড়তে দেখা গেছে। তবে দু’আড়াই মাস ধরে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে কিছুটা হলেও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার প্রবণতা দেখাতে পেরেছে, এটাই আশার কথা। তথাপি বাংলাদেশে শুধু নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব কি না, সেটি বুঝতে যথেষ্ট প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ, দুর্বৃত্ততাড়িত ও মুনাফাখোরী পুঁজিবাদের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির অনেকটাই অর্থনীতি শাস্ত্রের প্রচলিত তত্ত্বজ্ঞানের ধার ধারে না।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যা দেশীয় ও বৈশ্বিক উভয় প্রেক্ষাপটে প্রভাবিত। এই কারণগুলোকে সাধারণত অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক কারণ হিসেবে ভাগ করা যায়। অভ্যন্তরীণ কারণসমূহের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে, সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা। মূলত পরিবহন, সংরক্ষণ এবং বণ্টন ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে পণ্যের যথাযথ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হয়। এতে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যায়। ফলে, পণ্যের দাম বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত, জনসংখ্যার আধিক্যে অত্যধিক চাহিদা।

জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। বিশেষ করে খাদ্য, জ্বালানিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা বাড়ার ফলে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পায়। তৃতীয়ত, মুদ্রাস্ফীতি ও মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি। নিয়মিত হারে অর্থপাচারের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক মাঝেমধ্যেই অর্থনীতির চাহিদা মেটানোর জন্য বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বাড়ায়। এটি যখন অতিরিক্ত হয়, তখন মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি হয়। এতে করে বাজারে মুদ্রার মূল্য কমে যায়, যা দিনশেষে মূল্যস্ফীতি ডেকে আনে। চতুর্থত, জ্বালানি ও পরিবহন খরচ। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পরিবহন খরচ বাড়িয়ে দেয়, যা সমস্ত পণ্যের মূল্যে প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশে জ্বালানি আমদানি নির্ভরতা থাকার কারণে এটি আরও বেশি তীব্র হয়ে ওঠে। অন্যদিকে মূল্যস্ফীতির বাহ্যিক কারণসমূহের মধ্যে অন্যতম আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা। আমদানিনির্ভর দেশ হওয়ায় বৈশ্বিক বাজারে পণ্যের দামের ওঠানামা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে। খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানি এবং কাঁচামালের আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটলে তা আমদানির খরচ বাড়ায় এবং দেশের বাজারে মূল্যস্ফীতি ত্বরান্বিত করে। দ্বিতীয়ত, মুদ্রার বিনিময় হার।

মার্কিন ডলার বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক মুদ্রার তুলনায় টাকার মান কমলে আমদানি খরচ বেড়ে যায়। এই অবস্থায় দেশের অভ্যন্তরে পণ্যের দাম বাড়তে থাকে, মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস এবং খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশে আমদানির খরচ বাড়ে। এটি উৎপাদন খরচের ওপর প্রভাব ফেলে এবং সামগ্রিকভাবে বাজারে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ঘটায়।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির পেছনে আর যেসব বিষয় কাজ করে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরকারি নীতি ও পরিকল্পনা। সরকারের জ্বালানি ও কৃষিপণ্যের ওপর দেওয়া ভর্তুকি হ্রাস পেলে বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। এর ফলে সাধারণ জনগণের ওপর খরচের বোঝা বেড়ে যায়, যা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া আমদানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ও কর আরোপ করলে তা পণ্যের দামে প্রভাব ফেলে, যা বাজারে মূল্যস্ফীতির প্রবণতা বাড়ায়।

জলাবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধির ফলে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। খাদ্যপণ্যের উৎপাদন কমে গেলে এর চাহিদা মেটাতে আরও বেশি আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। ফলে, বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়ে। বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ, বাহ্যিক ও সরকারি নীতি-পরিকল্পনার এসব প্রভাব ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে দেখা দেওয়া মূল্যস্ফীতির পেছনে নিয়ামক ভূমিকা রাখছে বাজারে মনোপলি বা একচেটিয়া মুনাফা করার মানসিকতা ও অবৈধ মজুতদারি। ব্যবসায়ী শ্রেণি কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি মুনাফার উদ্দেশ্যে পণ্য মজুত করে রাখে, যা বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমিয়ে দেয়।

অবৈধ মজুতদারির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ধারা শুরু হলে ফাউখাওয়া শ্রেণির আরও বেশি মজুতদারি আরও তীব্র হয়, যা সরকারের নানা উদ্যোগকে পুরোপুরি নস্যাৎ করে দেয়। শাসক শ্রেণির আনুকুল্য, আইনের দুর্বলতা ও প্রয়োগে অনীহার সুযোগে নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠান বিশেষ কোনো পণ্যের ওপর বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে, তারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি করতে পারে।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য একটি সুষম মুদ্রানীতি, সুদহার নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার তদারকি প্রয়োজন। তবে সেক্ষেত্রেও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিশ্ববাজার ও বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতা। জ্বালানি, খাদ্য এবং অন্যান্য কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে মুদ্রার বিনিময় হার ও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা।

জনসংখ্যার আকার বৃদ্ধি এবং চাহিদার প্রবৃদ্ধির কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া সরবরাহ চেইনে বিভিন্ন সংকট, যেমন পরিবহন খরচ বৃদ্ধি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মূল্যস্ফীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নীতি সুদহার বৃদ্ধির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি কমানো গেলে ক্রয়ক্ষমতার ওপর চাপ কমে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা কমাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়।

তবে বেশি সুদের কারণে বিনিয়োগ কমে যেতে পারে। যার ফলে, চাকরির সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। এ ছাড়া, ঋণগ্রহণ কমলে ভোক্তা খরচ কমে যায়, যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার ওপর প্রভাব ফেলে এবং ব্যবসার আয় কমায়। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায়ই নীতি সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে থাকে। তবে, শুধু মুদ্রানীতি দ্বারা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কঠিন। কারণ, এটি অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি বৈদেশিক বাজারের ওপরও নির্ভর করে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ভতুর্কি প্রদান, কর কমানো এবং আমদানি শুল্ক হ্রাসের মতো পদক্ষেপ নিতে পারে।

এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও খাদ্যসহায়তা কর্মসূচি মূল্যস্ফীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়ক হতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঐকমত্যসহ দেশী-বিদেশী নানা বিষয় বাস্তবায়নের প্রয়োজন হয়। এসবের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও, তা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হলে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকে যেতে হবে। এজন্য স্বাধীন সরবরাহ  ব্যবস্থা সৃষ্টির জন্য খাদ্য ও শিল্পপণ্যের স্থানীয় উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত নীতি ও সরবরাহ চেইন ব্যবস্থাপনা তৈরি করতে বাজারে পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করা, আমদানি পণ্যের শুল্ক সহনশীল রাখা এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের মধ্যে ব্যবসায়ী শ্রেণির প্রবল উপস্থিতি হ্রাস করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারায় অর্থনীতির তত্ত্বজ্ঞান প্রয়োগ করে মূল্যস্ফীতির মতো অর্থনৈতিক সমস্যা নিরসন করা কঠিন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নীতি সুদহার ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবস্থা প্রয়োজন, যা স্থায়ী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

তবে এর জন্য আইন প্রণয়নে ব্যবসায়ী শ্রেণির নিরঙ্কুশ প্রভাব-প্রতিপত্তি দমন করতে হবে। বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে পদ্ধতিতে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসা উচিত। সরকারের সদিচ্ছাও দৃশ্যমান। কিন্তু লুটপাট ও আস্থার সংকটে বিপর্যস্ত ব্যাংক ও আর্থিক খাতে অতিরিক্ত মুনাফার হাতছানি দিয়ে আমানতকারীদের ফিরিয়ে আনা এবং তা বৃদ্ধি করা বেশ কষ্টকর।

একদিকে জনসংখ্যার বড় একটি অংশের সঙ্গে ব্যাংক খাতের সরাসরি সম্পর্ক নেই, তার ওপর তীব্র আস্থার সংকট রয়েছে এই খাতে। অন্যদিকে সময়সহ নানামুখী চাপে রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মূল্যস্ফীতি আগামী ছয়-বারো মাসের মধ্যে কতটুকু সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব হবে, সে নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকেই যায়।
লেখক : অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• ব্যাংক ডাকাতি শিখতে চেয়ে আলম সাহেবের কাছে চিঠি
• শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির ৮৮৬তম সভা
• বিদেশি তহবিল এনে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ন্যাশনাল ব্যাংকের
• শাহজালাল ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের সভা
• এবার নিজেই ডুবছে এক্সিম ব্যাংক!
• ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
• এনআরবিসি ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
• শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত
• ইউসিবির ৫০১তম পরিচালনা পর্ষদের সভা
• শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ৩৮৬তম সভা অনুষ্ঠিত
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved