Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে স্থিতিশীল পর্যায়ে রিজার্ভ [ অনলাইন ] 24/11/2024
পতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে স্থিতিশীল পর্যায়ে রিজার্ভ
গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিক কমছিল দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। প্রতি মাসে গড়ে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার করে ক্ষয় হতে থাকা রিজার্ভ আশঙ্কাজনক অবস্থানে পৌঁছেছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রিজার্ভের ক্ষয় বন্ধ হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে না বাড়লেও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, এত দিন রিজার্ভ থেকে মাসে ১ বিলিয়ন ডলার করে বিক্রি হচ্ছিল। বর্তমান গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর ডলার বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় প্রবাহ। ফলে ঘাটতি পূরণ করে স্থিতাবস্থা বজায় রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ২১ নভেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মজুদ ছিল ২৪ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার। সাড়ে তিন মাস আসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পূর্ব মুহূর্তে গত ৩১ জুলাই রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে রিজার্ভ প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার কমেছে। তবে এ সময়ে মধ্যে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। সবশেষ আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দায় শোধ করার আগে গত ৬ নভেম্বর রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রিজার্ভ স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এটা রিজার্ভের গ্রস হিসাব। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ হিসাবে গত বুধবার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার।

চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আকুর মাধ্যমে আমদানি পণ্যের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বিল বাবদ ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এতে তখন বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। আর আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাবে ১৮ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই মাসে আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আকু পেমেন্টের পরিমাণ বেড়েছে। আগে এটি সোয়া বিলিয়নের আশেপাশে ছিল। তবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এটি দেড় বিলিয়নে পৌঁছেছে। ডলার সংকটের কারণে এতদিন এলসি বা ঋণপত্র খুলতে সমস্যা হয়েছিল। বর্তমানে ডলার সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। তাই এলসির পরিমাণ বাড়ছে। আবার পবিত্র মাহে রমজান সামনে রেখে বেশ কিছু আমদানি পণ্যে শিথিলতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেসব পণ্যের এলসি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তা ছাড়া জরুরি পণ্যের এলসির বিষয়েও যথেষ্ট ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমদানি দায়ের চাপ বাড়ছে। তবু রিজার্ভে খুব একটা চাপ লক্ষ করা যাচ্ছে না।

রেমিট্যান্সের জোয়ারের কারণে রিজার্ভের পতন থেমেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত তিন মাস ধরে রেমিট্যান্স ধারাবাহিক বাড়ছে। গত আগস্টে ২২২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এরপর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রবাসী আয় ২৪০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।

এর আগে আগ্রাসী ডলার বিক্রির কারণে দ্রুত কমছিল দেশের রিজার্ভ। ক্ষয় ঠেকাতে বর্তমানে বিক্রি প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। গত তিন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব প্রয়োজনে রিজার্ভ থেকে খরচ করেছে ৩০ কোটি ডলার। অথচ এতদিন মাসিক বিক্রির হার ছিল কমবেশি এক বিলিয়ন করে। এমনকি দেশব্যাপী ব্যাপক আন্দোলনের মধ্যেও গত জুলাই মাসে ৬৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছিলেন সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। বর্তমান গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর বিক্রি বন্ধ করা হয়েছে। তবে নিজস্ব প্রয়োজনে সামান্য পরিমাণে ডলার ছাড় করতে হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরে ডলার বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। তবে এর সিংহভাগ আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিক্রি করা হয়। বর্তমান গভর্নর দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ২৮ আগস্ট রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি না করার ঘোষণা দেন। এরপর এটি প্রায় শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে বিক্রি হয়েছে ৯৮ কোটি ডলার। এর মধ্যে সরকার পতনের আগের মাস জুলাইয়ে বিক্রি হয় ৬৮ কোটি ডলার। আগস্টে তা কমে দাঁড়ায় ১৭ কোটি ডলারে। সেপ্টেম্বর মাসে এটি আরও কমে ১১ কোটি ডলার হয়েছে। আর অক্টোবর মাসের ২৮ দিনে বিক্রি হয়েছে মাত্র ২ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি বন্ধ আছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব প্রয়োজন যেমন কাগজ-কালি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক প্রয়োজনে কিছু ডলার খরচ হচ্ছে।

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বর শেষে রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার ও বিপিএম হিসাবে ১৯ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। আগস্টে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম হিসাবে ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। আর চলতি বছরের জুলাইয়ে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ হিসাবে তা ২০ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• ব্যাংকিং খাতে সংস্কার এবং এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব
• কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এখন ‘মহাজন’
• আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান
• এনআরবিসি ব্যাংক ও ডিআরইউয়ের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান
• ইউসিবি নাইট’ আয়োজনে গ্রাহক ও অংশীদারদের অব্যাহত সহযোগিতার স্বীকৃতি
• প্রয়াত সাংবাদিকদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দিল এনআরবিসি ব্যাংক-ডিআরইউ
• এনসিএল টি২০ টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর এআইবি পিএলসি
• রাজস্ব আদায় সহজ করতে ঢাকা ব্যাংকের সঙ্গে ডিএসসিসির সমঝোতা স্মারক সই
• আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান
• সাউথইস্ট ব্যাংকের টাইনি টটস ও সামার ফিল্ড ইন্টারন্যাশনালের মধ্যে চুক্তি
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved