Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাপানো টাকা কোথায়, কার কাছে কত [ অনলাইন ] 03/12/2024
বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাপানো টাকা কোথায়, কার কাছে কত
সরকার তারল্যসংকটে পড়া ছয় ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেবে। অনেকেই মনে করেন, নতুন টাকা ছাপিয়েই দুর্বল ব্যাংকগুলোকে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ জন্য নতুন নোট ছাপানোর প্রয়োজন পড়বে না। কারণ, এই টাকার বড় অংশই ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন হবে। বাকি যে টাকা প্রয়োজন হবে, তা ভল্ট থেকে দেওয়া যাবে।

সানাউল্লাহ সাকিব:

নতুন টাকা ছাপানো নিয়ে দেশের ব্যাংক খাতে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছে। বিশেষ করে টাকা ছাপিয়ে তারল্যসংকটে পড়া ছয় ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে, এমন খবরে এ আলোচনার পালে হাওয়া লেগেছে। অনেকের কাছে মনে হতে পারে, টাকা ছাপানো মানেই টাঁকশালের যন্ত্রে টাকা ছাপানো শুরু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তা ব্যাংকগুলোকে বস্তায় ভরে দেওয়া হবে। আসলে তা নয়। বাস্তবতা হলো, সব টাকা ছাপানো হয় না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে সব সময়ই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ছাপানো টাকা থাকে, তা চাহিদা অনুযায়ী বাজারে ছাড়া হয়।

আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাপানো টাকাকে বলা হয় রিজার্ভ মানি, যা ‘হার্ড মানি’ হিসেবেও পরিচিত। দেশের ব্যাংক খাতে গত সেপ্টেম্বরে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। তখন দেশে ছাপানো টাকার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। আসলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ১০০ টাকা ছাড়লে তা পাঁচ গুণের মতো, অর্থাৎ ৫০০ টাকার ‘ভ্যালু’ তৈরি করে। তবে টাকা ছাপানো হলে তা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে। সে জন্য অর্থনীতিবিদেরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বার্থে টাকা না ছাপানোর পক্ষে মত দিয়ে থাকেন।

একটা উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক। ধরুন, ফারজানা হোসেন নামের একজন প্রতি মাসে এক লাখ টাকা বেতন পান। তা থেকে তিনি বাসাভাড়া, বাচ্চার স্কুলের বেতনসহ যাবতীয় খরচ ডিজিটাল মাধ্যমে পরিশোধ করেন। বাজারেরও বড় অংশ পরিশোধ করেন কার্ডের মাধ্যমে। শুধু যাতায়াত খরচ ও হাতখরচের জন্য মাসে হাজার দশেক টাকা নগদে তোলেন। অর্থাৎ তিনি ১০ শতাংশ টাকা নগদে খরচ করেন। ঠিক এভাবেই দেশের বেশির ভাগ টাকা ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন হয়, যা ছাপানোর প্রয়োজন পড়ে না। এতে যেমন টাকা ছাপানোর খরচ কমে, অন্যদিকে আর্থিক লেনদেনের সঠিক হিসাবও সংরক্ষিত থাকে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, টাকা ছাপানো হলেই তা বাজারে বা ব্যাংকগুলোর কাছে দেওয়া হয় না। যে টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হয়, তার বড় অংশই ব্যাংক থেকে বের হয়ে মানুষের পকেটে ও বাড়িতে যায়। এসব টাকা হাতে হাতে ঘোরে, অর্থাৎ লেনদেন হয় এবং দ্রুতই ব্যাংকে ফিরে আসে না। ব্যাংকগুলোর ভল্টেও কিছু টাকা জমা থাকে, যা দিয়ে গ্রাহকের দৈনন্দিন নগদ টাকার চাহিদা মেটানো হয়। এ ছাড়া ছাপানো টাকার একটা বড় অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাসে ব্যাংকের বাইরে টাকার পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যায়। পরের মাস সেপ্টেম্বরেই প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে ফিরে আসে। এরপরের মাসগুলোয় অবশ্য ব্যাংকের বাইরে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায় বলে জানান ব্যাংকাররা। কারণ, তারল্যসংকটে পড়া কয়েকটি ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের টাকা তোলার হিড়িক পড়ে। এসব টাকা ঘুরেফিরে আবার অন্যান্য ব্যাংকে জমা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে ব্যাংক খাতে ছাপানো টাকার পরিমাণ (রিজার্ভ মানি) ছিল ৩ লাখ ৭৫ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা, যা আগস্টে ছিল ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে ছাপানো টাকার পরিমাণ কমে ১০ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। একই মাসে বাজারে প্রচলিত টাকার পরিমাণও কমে আসে। সেপ্টেম্বরে বাজারে চালু থাকা টাকার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার ১৩ কোটি টাকা, যা আগস্টে ছিল ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। আগস্টে ব্যাংকের বাইরে মানুষের কাছে নগদে (হাতে ও বাড়িতে) ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরে কমে হয় ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা।

মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পর যা আর ব্যাংকে জমা হয় না, তা-ই ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা হিসেবে পরিচিত। এই টাকা মানুষ হয় দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে, নয়তো বেশি লাভের আশায় ব্যাংকের বাইরে বিভিন্ন সমিতিতে রাখেন বা জমি–ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করেন। আবার কেউ কেউ টাকা তুলে ঘরেও রেখে দেন।

ছাপানো টাকার মধ্যে গত আগস্টে ব্যাংকের ভল্টে ছিল ২৬ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয় ২৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে গত আগস্টে ৬৭ হাজার ৮৩ কোটি টাকা ছিল, যা সেপ্টেম্বরে কমে হয় ৬৪ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। ফলে নতুন করে ছয় ব্যাংককে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হলেও তার জন্য নতুন নোট ছাপানোর প্রয়োজন পড়ছে না। কারণ, এই টাকার বড় অংশই ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন হবে। বাকি যে টাকা প্রয়োজন হবে, তা ভল্ট থেকে দিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• সাউথইস্ট ব্যাংকের কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান
• বগুড়া প্রেস ক্লাব ভবনে জনতা ব্যাংকের সপ্তপদী মার্কেট শাখা
• এমটিবি বিএম ও বামেলকো সম্মেলন
• এমটিবি বিএম ও বামেলকোর যৌথ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
• বগুড়া প্রেসক্লাব ভবনে জনতা ব্যাংকের সপ্তপদী মার্কেট শাখার কার্যক্রম শুরু
• বিশেষ সিএসআর ফান্ডের আওতায় কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো সাউথইস্ট ব্যাংক
• ইউসিবি’র দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ পেলেন ১৫০ কৃষি-উদ্যোক্তা
• এমটিবি বিএম ও বামেলকো সম্মেলন অনুষ্ঠিত
• বগুড়া প্রেসক্লাব ভবনে জনতা ব্যাংকের সপ্তপদী মার্কেট শাখার কার্যক্রম শুরু
• কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দিলো সাউথইস্ট ব্যাংক
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved