[ অনলাইন ] 05/06/2025 |
|
|
|
আগের মত আমানত পাচ্ছে না ব্যাংকগুলো |
 |
ব্যাংকাররা বলছেন, আমানতকারীদের আস্থা এখনও সেভাবে ফেরেনি। যেটির প্রভাব পড়েছে আমানতে। |
টানা সাত মাস ধরে ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধির হার এক অঙ্কের ঘরে থাকার মধ্যে এপ্রিলে তা আগের মাসে চেয়ে আরও কিছুটা কমেছে।
ব্যাংকগুলোতে মার্চে সামান্য বাড়লেও এপ্রিলে আমানতের প্রবৃদ্ধির হার আবার কমে হয়েছে ৮ দশমিক ২১ শতাংশ। মার্চে যা ছিল ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ।
বর্তমানে অনেক ব্যাংক আমানতের বিপরীতে ১১ থেকে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। তাতেও আশানুরূপ আমানত পাচ্ছে না।
ব্যাংকাররা এর কারণ হিসেবে বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে মানুষের হাতে টাকা জমছে না; বেকার বাড়ায় অনেকে আয় করতে পারছেন না। এতে ব্যাংকে টাকা জমা রাখার পরিমাণ কমেছে।
এর সঙ্গে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি সরকারের ব্যাংক ঋণের হার কমে যাওয়ায় টাকার সঞ্চালনে নিম্নমুখী প্রবণতার প্রভাব ব্যাংকের মাসওয়ারী আমানাতের হিসাবে পড়েছে বলে তারা মনে করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বুধবার প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য বলছে, টানা সাত মাস ধরে ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধির হার এক অঙ্কের ঘরেই রয়ে গেছে।
চলতি বছর এপ্রিল শেষে ব্যাংকগুলোতে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪ সালের একই মাসে যা ছিল ১৬ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকা।
পট পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাতে অস্থিরতা বাড়তে থাকলে গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে থাকেন। এ প্রবণতা চলতে থাকে বেশ কয়েকমাস ধরে।
ব্যাংকাররা বলছেন, আমানতকারীদের আস্থা এখনও সেভাবে ফেরেনি। যেটির প্রভাব পড়েছে আমানতে।
চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর থেকে আমানতে প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে, যা ওই মাসে ৭ দশমিক ২৬ শতাংশে নেমে যায়। এরপর থেকে এ হার ওঠানামা করলেও তা এখনও দুই অঙ্ক ছোঁয়নি।
আমানতে উন্নতি না হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর মে মাসে কয়েকটি সংবাদ সম্মেলন ও অনুষ্ঠানে বলেছেন, মূলত ডলার পাচার হওয়ার কারণেই সেই পরিমাণ টাকা ব্যাংকিং চ্যানেল থেকে চলে গেছে। তাতে টাকার সংকট তৈরি হয়েছে। এজন্য ব্যাংকগুলো আমানতে উচ্চ সুদ দিয়েও আমানতের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পারছে না।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধতন কর্মকর্তা ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, সাধারণত ব্যাংক থেকে যখন ঋণ নেওয়া বাড়ে তখন আমানতের প্রবৃদ্ধি বেড়ে যায়। কারণ সরকারি ও বেসরকারি খাতে ঋণ গেলে সেটা ব্যাংকেই আমানত হিসেবে ফিরে আসে। তখন টাকার সঞ্চালন বাড়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, সার্বিক অর্থনীতির কথা বিবেচনা করলেও কমপক্ষে আমানতের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) রিসার্চ ফেলো মুনতাসির কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিগত কয়েক মাস ধরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কম। যখন উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন কোম্পানি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া কমাবে তখন আমানতের প্রবৃদ্ধিও কমবে।”
বেসরকারি খাতে মার্চে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। টানা পাঁচ মাস ধরেই ৮ শতাংশের নিচে রয়েছে এ খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি।
এছাড়া সরকারি খাতে ঋণ দেওয়া কমলেও আমানতের প্রবৃদ্ধি কমে যায় বলে মুনতাসির কামাল মনে করেন।
উচ্চ মূল্যস্ফীতিকেও আরেকটি কারণ হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, ব্যয় বেড়ে যাওয়ায মাস শেষে টাকা থাকছে না মানুষের হাতে। বাড়তি টাকা না থাকার কারণে সেগুলো ব্যাংকে আসছে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। বর্তমানে এ হার ৯ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক কর্মকর্তা বলেন, বেকারত্বের হার বাড়ছে। এতেও আমানতের ওপর এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মানুষের হাতে কাজ থাকলে আয়ের কিছু অংশ আমানত হিসেবে ব্যাংকে আসে। সবশেষ হিসাব তো বলছে, কাজবিহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
 |
|