Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
এসএমই গ্রাহকদের জন্য যমুনা ব্যাংকে বিশেষ সেবা [ Online ] 27/06/2025
এসএমই গ্রাহকদের জন্য যমুনা ব্যাংকে বিশেষ সেবা
মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন আহম্মদ বর্তমানে যমুনা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি ও এসএমই গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিতে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসএমই খাতের উন্নয়নে যমুনা ব্যাংকের নানা উদ্যোগ বিষয়ে সম্প্রতি তিনি কথা বলেছেন দেশ রূপান্তরের সঙ্গে

দেশ রূপান্তর : আপনি বাংলাদেশের এমএসএমই খাতের বর্তমান অবস্থা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? এই খাতের বিকাশে ব্যাংকগুলো কী ভূমিকা রাখতে পারে?

মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন : এমএসএমই খাত আমাদের জাতীয় অর্থনীতির মেরুদ-। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আয়ের উৎস এবং আঞ্চলিক উন্নয়নে এর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং দেশীয় চ্যালেঞ্জের মধ্যেও এই খাত নিজের স্থিতিশীলতা ও অভিযোজন

ক্ষমতা প্রমাণ করেছে। যমুনা ব্যাংকে আমরা এমএসএমই গ্রাহকদের শুধু ঋণগ্রহীতা হিসেবে দেখি না তারা আমাদের জাতীয় উন্নয়নের অংশীদার। গত তিন বছরে আমরা প্রতিবছর ৮ হাজারের বেশি এমএসএমই ক্লায়েন্টকে সেবা দিয়েছি। ২০২৪ সালে ৮ হাজার ৩৪০ জন গ্রাহককে সেবা দিয়েছি, যার মোট স্থিতি ছিল ২ হাজার ১৪৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ১৭৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, মোট ২৩ হাজার ৯২টি হিসাবের বিপরীতে এ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এটি আমাদের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি ও গ্রাহকদের আস্থার প্রতিফলন। আমাদের গ্রাহকরা বাণিজ্য, উৎপাদন ও পরিষেবা খাতের বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে আছেন। আমরা এই সহায়তার পরিসর আরও বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দেশ রূপান্তর : এমএসএমই উদ্যোক্তারা আর্থিক সহায়তা পেতে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হন, সেগুলো কী? যমুনা ব্যাংক কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, বিশেষত মাইক্রো ও কটেজ শিল্পে?

মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন : অর্থায়নে প্রবেশাধিকার এখনো এমএসএমইদের প্রধান বাধা, বিশেষ করে মাইক্রো ও কটেজ পর্যায়ে। অনেক ব্যবসায়িক উদ্যোগে যথাযথ নথিপত্র বা জামানতের অভাব থাকে। আবার অনেকেই ব্যাংকিং পণ্য সম্পর্কে সচেতন না। যমুনা ব্যাংক এসব বাস্তবতার আলোকে সুনির্দিষ্ট সমাধান এনেছে। দ্রুত ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়া চালু করেছি। হেড অফিসে ৩-৫ দিন ও শাখায় ৭ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। আমাদের ঋণ অনুমোদন হার ৯১ শতাংশ, আর প্রত্যাখ্যান মাত্র ৯ শতাংশ। আমরা গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা, গতি ও সরলতা নিশ্চিত করতে কাজ করছি যাতে কোনো সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা পিছিয়ে না থাকে।

দেশ রূপান্তর : যমুনা ব্যাংকের কী এমএসএমইদের জন্য আলাদা কোনো প্রোডাক্ট, আর্থিক সাক্ষরতা কার্যক্রম বা গ্যারান্টি স্কিম রয়েছে?

মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন : আমরা এমএসএমইদের জন্য বিশেষভাবে নকশা করা ২৪টি ঋণপণ্য চালু করেছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য যমুনা এসএমই স্টার্টআপ, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ এসএমই নারী উদ্যোগ, ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ট্রেডারদের জন্য যমুনা স্বপ্ন এবং যমুনা গৃহ। এই প্রোডাক্টগুলো ব্যবসার বিভিন্ন পর্যায়ের প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি কর্মধারার পুঁজি, সম্প্রসারণ, যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ট্রেড সাপোর্ট।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারত্বে ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের (সিজিএস) আওতায় জামানতবিহীন ঋণ দেওয়া হচ্ছে। কভিড-১৯ চলাকালীন সিজিএস-এর মাধ্যমে তরলতা নিশ্চিত করা হয়। বর্তমানে নারী উদ্যোক্তাদের পুনঃঅর্থায়ন ও ২৫ হাজার কোটি টাকার প্রি-ফাইন্যান্স স্কিমে ঋণ বিতরণ চলছে। সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে আমরা আর্থিক সাক্ষরতা কর্মসূচি পরিচালনা করছি।

দেশ রূপান্তর : উপশহর ও গ্রামীণ এলাকার এমএসএমইদের কাছে পৌঁছাতে যমুনা ব্যাংক কীভাবে প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা ব্যবহার করছে?

মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন : সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং মানে শুধু শাখা নয় ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করা। তাই আমরা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ এমএসএমইদের কাছে ঋণসেবা পৌঁছে দিচ্ছি। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তারা ঋণ, সঞ্চয়, পরামর্শসহ নানা সেবা পাচ্ছেন। এতে গ্রাহকরা শাখায় না গিয়েই ব্যাংকিং সেবা নিতে পারছেন।

একইসঙ্গে, সিএমএসএমই গ্রাহকদের জন্য একটি ডেডিকেটেড ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছি। এতে থাকবে অনলাইন ঋণ আবেদন, লাইভ স্ট্যাটাস ট্র্যাকিং, স্বয়ংক্রিয় নোটিফিকেশন এবং ভবিষ্যতে মোবাইল/ইন্টারনেট ব্যাংকিং সংযোগ। এ উদ্যোগ গ্রামীণ ও শহুরে এমএসএমইদের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে দেবে।

দেশ রূপান্তর : নারী নেতৃত্বাধীন এমএসএমই ও প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য যমুনা ব্যাংক কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে?

মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন : নারী উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শক্তিশালী পরিবর্তন আনতে সক্ষম। ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা ১ হাজার ৭৫১টি নারী-নেতৃত্বাধীন এমএসএমইকে ৩৭৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছি, যা আমাদের এমএসএমই পোর্টফোলিওর ২.৮ শতাংশ।

আমাদের অন্যতম অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প হল অমল ফুডস। প্রতিষ্ঠাতা রেজিনা আফরোজ ছাত্রজীবনে ছোট ব্যবসা দিয়ে শুরু করে বর্তমানে দেশের অন্যতম বড় বেকারি চেইন প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে যমুনা ব্যাংক আর্থিক অংশীদার হিসেবে পাশে থেকেছে। এমন সাফল্য আমাদের আরও উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করে। আমরা নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন প্রোডাক্ট তৈরি এবং প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা সম্প্রসারণে কাজ করছি।

দেশ রূপান্তর : বাংলাদেশের এমএসএমই খাতের টেকসই উন্নয়নের জন্য আপনি কী ধরনের নীতি সংস্কার বা অংশীদারত্বের পরামর্শ দেবেন?

মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন : টেকসই উন্নয়নের জন্য আমরা ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য করনীতি সরলীকরণ, নতুন উদ্যোগের জন্য সুদ সুবিধা এবং জামানতবিহীন ঋণে প্রবেশাধিকার সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংক, এসএমই ফাউন্ডেশন ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা জরুরি। সরকারি প্রণোদনা স্কিমগুলো যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তাহলে ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণ আরও বাড়বে।

ডিজিটালাইজেশন, বাজার সংযুক্তি ও উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে দেশের এমএসএমই খাতকে আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করানো সম্ভব। যমুনা ব্যাংক এই অভিযানে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।

দেশ রূপান্তরকে সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

দেশ রূপান্তরকেও ধন্যবাদ।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• আমাদের ই-ঋণ প্লাটফর্মে গ্রাহক এক কর্মদিবসে প্রথমিক ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন
• নারী উদ্যেক্তাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও বাজার সংযোগ নিশ্চিতে কাজ করছি
• বাণিজ্য উৎপাদন পরিষেবা সব সেক্টরেই আমাদের এমএসএমই ক্লায়েন্টরা কক্রিয়
• এমএসএমই খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ
• আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন খুবই সম্ভাবনাময়
• আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদন খুবই সম্ভাবনাময়
• প্রত্যেকটি স্কুলকে একটি ব্যাংকের সঙ্গে থাকতে হবে: গভর্নর
• এবি ব্যাংকের উদ্যোগে কক্সবাজারে মাসব্যাপী উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচীর উদ্বোধন
• ঢাকা ব্যাংকের নতুন উপশাখা উদ্বোধন
• স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৪১২তম বোর্ড সভা
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved