Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
একীভূত হতে আগ্রহী নয় এক্সিম ব্যাংক [ অনলাইন ] 29/06/2025
একীভূত হতে আগ্রহী নয় এক্সিম ব্যাংক
শরিয়াহভিত্তিক দুর্বল পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক রূপান্তর (একীভূত) করে বড় একটি ব্যাংক গঠনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে আগ্রহী নয় এক্সিম ব্যাংক। মূলত ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা অন্য চারটির চেয়ে তুলনামূলক ভালো হওয়ায় একীভূত হওয়ার পরিবর্তে নিজ সক্ষমতায় ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে চায়। তাই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া থেকে বাঁচতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা। বিশ্লেষকরাও মনে করেন, কোনো ব্যাংকের একা চলার মতো সামর্থ্য থাকলে তাকে একাই চলতে দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ ব্যাংক যে পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে সেগুলো হলোÑ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ছাড়া বাকি চারটির নিয়ন্ত্রণ এত দিন এস আলম গ্রুপের হাতে ছিল। গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর এ ব্যাংকগুলোর পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন এই পাঁচটি ব্যাংককে একত্র করে নতুন একটি ব্যাংক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে এ বিষয়ে সভাও করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, বিশেষ নিরীক্ষার পর ব্যাংকটির সঙ্গে একীভূত করার আলোচনা করা হয়েছে। তবে এখনো একীভূত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। একীভূত হওয়ার মতো পরিস্থিতি না হলে বা কেউ ইচ্ছুক না হলে একীভূত করা হবে না। সবার সঙ্গে পরামর্শ করেই এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হবে। আমানতকারীদের স্বার্থেই সবকিছু করা হবে।

জানা যায়, একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে এস আলমের চার ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক নানা সূচকে এক্সিম ব্যাংক ভালো অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে ব্যাংকটির পর্ষদ ও শেয়ারধারীরা ওই চার ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে আগ্রহী নয়। এক্সিম ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অন্য চারটি ব্যাংক এখনও আমদানি-রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ের যে ব্যবসা করে, তার চেয়ে একাই বেশি ব্যবসা করছে এক্সিম ব্যাংক। দেশের রপ্তানি খাতের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের অনেকে এখনও এক্সিম ব্যাংকের গ্রাহক।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, কোন মানদণ্ডের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেটা অবশ্যই জানাতে হবে। ব্যাংকিং রেজ্যুলেশন অর্ডিন্যান্সের ধারা অনুযায়ীই কাজ করতে হবে। আইনগতভাবে সেই সুযোগ বা রেজ্যুলেশন প্ল্যান অবশ্যই ব্যাংককে আগে জানাতে হবে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে এক্সিম ব্যাংক আমদানি-রপ্তানি ও প্রবাসী আয়ে ৫০ হাজার ৩৮১ কোটি টাকার ব্যবসা করে। আর চলতি বছর মে মাস পর্যন্ত ব্যবসা করেছে ১৮ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা, যা বাকি চারটি ব্যাংকের চেয়ে বেশি। গত ১০ মাসে এক্সিম ব্যাংকে ২ লাখ ৯৪ হাজার নতুন হিসাব খোলা হয়েছে। এ সময়ে নতুন আমানত এসেছে ১০ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা; অন্যদিকে ঋণ আদায় হয়েছে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বর্তমানে সারা দেশে এক্সিম ব্যাংকের ১৫৫টি শাখা ও ৭৪টি উপশাখা রয়েছে। ব্যাংকটিতে কর্মরত আছেন ৩ হাজার ৩৯৩ জন। এক্সিমের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৬ লাখ ৬৪ হাজার। গত মে মাস শেষে ব্যাংকটির আমানত দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকায়, ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ ৫৩ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যে বিবেচনায় পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে, তার মধ্যে এক্সিম ব্যাংক পড়ে না। একীভূত করার ঘোষণার কারণে আমাদের গ্রাহকরা শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন, যা পুরো ব্যাংক খাতে আস্থাহীনতা তৈরি করেছে। আমাদের একীভূত করা হবে না, এই ঘোষণা দিলেই এক্সিম ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে। সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চললে আগামী বছর নতুন রূপে ফিরবে এক্সিম ব্যাংক।

পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পর আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অডিট ফার্ম দিয়ে শরিয়াভিত্তিক এ পাঁচটি ব্যাংকের অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ (একিউআর) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ‘আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং’ ও ‘কেপিএমজি’র করা এ নিরীক্ষা এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। একিউআর প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, শরিয়াহভিত্তিক এ পাঁচ ব্যাংকে জমা থাকা আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৫৮ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। আর ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণ (বিনিয়োগ) স্থিতি ১ লাখ ৯১ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকাই খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এ ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ৭৬ দশমিক ৬৯ শতাংশই খেলাপি। এ পাঁচ ব্যাংকের সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ ৭৪ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এ পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে খেলাপির হারে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের। ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের ৯৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ খেলাপি। এ ছাড়া ইউনিয়ন ব্যাংকের ৮৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামীর ৯৫ শতাংশ ও এসআইবিএলের ৬২ দশমিক ৩০ শতাংশই খেলাপি হয়েছে। তবে এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার পাচ্ছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু
• ব্যাংক ব্যবস্থার দুর্বলতায় ব্যবসা নেতিবাচক
• দুর্বল ব্যাংকগুলোয় সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
• এনসিটি চালাবে বন্দর-নেভি
• ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সঙ্কটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে -সেমিনারে ডিসিসিআই সভাপতি
• অচল ব্যবসাবাণিজ্য
• খেলাপির কারণে ব্যাংকিং খাত সংকটে আছে
• সাত উদ্যোক্তাকে সম্মাননা দিল প্রাইম ব্যাংক
• আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে অচলাবস্থা
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved