Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
লাভ করেও লভ্যাংশ দিতে পারেনি ১২ ব্যাংক [ Online ] 11/07/2025
লাভ করেও লভ্যাংশ দিতে পারেনি ১২ ব্যাংক
দেশের তালিকাভুক্ত ১৯টি ব্যাংক ২০২৪ সালের জন্য তাদের শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি ব্যাংক লোকসানের মুখে পড়লেও বাকি ১২টি মুনাফা করেও লভ্যাংশ দিতে পারেনি। মূলত, অপর্যাপ্ত মূলধন এবং খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় সঞ্চিতি সংরক্ষণে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের লভ্যাংশ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

জানা গেছে, এই ব্যাংকগুলো লভ্যাংশ প্রদানের অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আবেদন করেছিল। কিন্তু ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, আর্থিকভাবে দুর্বল কোনো প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণার সুযোগ না থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের আবেদন নাকচ করে দেয়।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই কঠোর সিদ্ধান্তে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিলেও পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা এটিকে সমর্থন করেছেন। তাদের মতে, স্বল্পমেয়াদী লাভের চেয়ে ব্যাংকিং খাতের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত যৌক্তিক।

বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে ৩৬টি ব্যাংক তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এবং ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি এখনো তাদের ২০২৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

যেসব ব্যাংক মুনাফা করেও লভ্যাংশ দিতে পারেনি

মুনাফা করার পরও যে ১২টি ব্যাংককে লভ্যাংশ প্রদানে বিরত রাখা হয়েছে সেগুলো হলো: আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) এবং সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংক।

লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি যারা

লোকসানের কারণে লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হওয়া সাতটি ব্যাংক হলো: এবি ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।

মূলধন ও সঞ্চিতি ঘাটতি পূরণের জন্য মুনাফাকারী ১২টি ব্যাংককে নিজ নিজ পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে একটি বাস্তবসম্মত ও সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর পাশাপাশি, গত মার্চ মাসে লভ্যাংশ প্রদানের নিয়মাবলী আরও কঠোর করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, যেসব ব্যাংক সঞ্চিতি সংরক্ষণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাড় নেয়, তারা লভ্যাংশ দিতে পারে না। আগামী বছর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা সেইসব ব্যাংকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে, যাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ মোট ঋণের ১০ শতাংশ অতিক্রম করবে।

শান্তা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মনিরুল ইসলাম দুর্বল ব্যাংকগুলোকে লভ্যাংশ প্রদানে বিরত রাখার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেন, ‘ব্যাংকিং ব্যবসার জন্য শক্তিশালী মূলধন ভিত্তি অপরিহার্য। মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী না করে লভ্যাংশ দিলে তা ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদী টেকসই হওয়ার পথে প্রভাব ফেলবে।’

তিনি আরও বলেন, এই সিদ্ধান্তে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা হতাশ হলেও, মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী হলে ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণ বিতরণের সক্ষমতা বাড়বে।

একই সুরে সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি আসিফ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক ব্যাংকের মূলধন ভিত্তি দুর্বল। তাদের মূলধন ভিত্তি উন্নত করতে মুনাফার যথাসম্ভব বেশি অংশ সংস্থান হিসেবে রেখে দেওয়া জরুরি।’ তিনি যোগ করেন, ন্যূনতম মূলধনের শর্ত পূরণ করতে পারলেই এই ব্যাংকগুলো পুনরায় লভ্যাংশ দিতে সক্ষম হবে। নতুন শেয়ার ছাড়া বা বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমে তারা দ্রুত সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে।

প্রায় ২০১০ সালের দিকে আকর্ষণীয় লভ্যাংশের কারণে ব্যাংকের শেয়ার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগকারীদের কাছে অত্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ছিল। কিন্তু এখন অনেক ব্যাংকের শেয়ারই স্বল্প আয়ের বিনিয়োগে পরিণত হয়েছে।

কার্যক্রমের এই অবনমন শেয়ারের দরেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ১৬টির শেয়ার অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে, যার মধ্যে কয়েকটির দাম ৩ টাকা থেকে ৮.৬ টাকায় নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীদের চাহিদা একেবারে কমে যাওয়ায় কিছু ব্যাংক ক্রেতা খুঁজে পেতেও হিমশিম খাচ্ছে।

এসব দুর্বল শেয়ার ধরে রেখে খুচরা বিনিয়োগকারীরা এখন উভয় সংকটে পড়েছেন। তাদের অনেকের জন্যই শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে আসার কোনো স্পষ্ট পথ খোলা নেই।

জাকির হোসেন নামের একজন বিনিয়োগকারী বলেন, তিনি আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্বাস করে এবং ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করবে না ভেবে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের শেয়ার কিনেছিলেন। তিনি বলেন, ‘কিন্তু রাজনৈতিক পালাবদলের পর গত বছর হঠাৎ করেই ব্যাংকগুলো বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ প্রদর্শন করে। ফলে তাদের আয় কমে যায় এবং তারা লোকসানের শিকার হয়।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৪ লক্ষ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা।

জাকির হোসেন নিরীক্ষক, ঋণমান যাচাইকারী সংস্থা এবং স্বতন্ত্র পরিচালকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘তারা যদি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতেন, তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ওইসব ব্যাংকে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না।’ তিনি জনগণের অর্থ অব্যবস্থাপনা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করার জন্য দায়ী ব্যাংক পরিচালকদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির ৮৯৯তম সভা অনুষ্ঠিত
• প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ১৫ ব্যাংকের
• প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ১৫ ব্যাংকের
• প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ১৫ ব্যাংকের
• প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ১৫ ব্যাংকের
• এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোষাধ্যক্ষ
• আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে জেনারেল ব্যাংকিং প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন
• আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে ‘জেনারেল ব্যাংকিং ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন
• শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা
• আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের ৪৩১তম (বিশেষ) পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved