[ অনলাইন ] 03/07/2025 |
|
|
|
শেষ মাসে হোঁচট খেল রপ্তানি আয় |
 |
|
রপ্তানি গতি পেয়েছিল, কিন্তু বছর শেষে আচমকা একটা ‘ব্রেক’ পড়ে গেল। জুন মাসে হোঁচট খেল রপ্তানি আয়। ঈদুল আজহার লম্বা ছুটি আর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কমপ্লিট শাটডাউনে মাসের শুরু আর শেষের কয়েক দিন রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। যার জেরে রপ্তানি আয় কমেছে ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
বছরের অন্য ১১ মাসে আয় ছিল আশাব্যঞ্জক। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৪৯৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। জুনের শেষে, অর্থাৎ পুরো অর্থবছর শেষে গিয়ে তা দাঁড়াল ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে গত বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। বৈশ্বিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ইরান-ইসরায়েল, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধসহ দেশি ও আন্তর্জাতিকভাবে নানা চাপ ও অস্থিরতার মধ্যে বিদায়ী বছরের এই প্রবৃদ্ধি মন্দ নয়। তবে এক মাসে আয় কমেছে ১৩৯ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। তার মানে মে মাসে রপ্তানি যেখানে ছিল ৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার, জুনে তা নেমে এসেছে ৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়নে।
রপ্তানিকারকেরা বলছেন, ঈদের ছুটিতে কারখানা বন্ধ ছিল। আর মাসের শেষে এনবিআরের কর্মবিরতির কারণে বন্দরের গেট ছিল বন্ধ। তাঁরা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এই সময় বন্দরে অপেক্ষমাণ কার্গোতে রপ্তানি পণ্য লোড হবে কীভাবে এবং রপ্তানি গন্তব্যে যাবে কীভাবে?’
ঈদের ছুটি, এনবিআর বন্ধ—বন্দরে তালা
গত ২৬ ও ২৭ জুন এনবিআরের কমপ্লিট শাটডাউনে আমদানি-রপ্তানি কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে বন্দরে রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ জমে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর আগে এমন ছুটি ও শাটডাউনের যুগলবন্দী খুব একটা দেখা যায় না। পোশাকমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার কারখানায় জুনে রপ্তানি কমেছে। ছুটি না থাকলে এই মাসে (জুন) রপ্তানি আয় মে মাসকে ছাড়িয়ে যেত।’
মোহাম্মদ হাতেম আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘আরও কয়েক মাস হয়তো চলবে। কিন্তু এরপর ধাক্কা লাগবে। কারণ, অর্ডার নিতে হচ্ছে লোকসানে। কারখানা চালু রাখতে বাধ্য হচ্ছি কমদামে কাজ নিতে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। আরও হবে।’
কে কোথায় দাঁড়াল, খাতওয়ারি হিসাব
রপ্তানিতে সবচেয়ে বড় খাত পোশাকশিল্প। সেখানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। কৃষিপণ্যও মন্দ নয়—২ দশমিক ৫২ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য ছুটছে—প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ২১ শতাংশ। তবে কাচজাত পণ্য রপ্তানিতে ভরাডুবি হয়েছে। এ খাতে ৩৮ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। অন্যদিকে পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় কমেছে ৪ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে এত হুলুস্থুলের মধ্যেও সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো, সারা বছরের মোট রপ্তানি আয় বেড়েছে। গত বছরের ৪ হাজার ৪৪৬ কোটি ৯৭ লাখ ডলারের চেয়ে এবার বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৮২৮ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।
কেউ হতাশ, কেউ আশাবাদী
বিশ্বব্যাংকের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দেশ ও বৈশ্বিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকলে রপ্তানির ধারা ভালো থাকবে। তবে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ, ট্রাম্পের শুল্কনীতি—সবই প্রভাব ফেলতে পারে।’
বাংলাদেশ অ্যাপারেলস এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল অবশ্য আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘ইউরোপে খুব একটা পরিবর্তন হবে না। ভালো অর্ডার আসছে। আশা করছি, ইতিবাচক ধারা থাকবে।’ |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
 |
|