[ অনলাইন ] 09/05/2024 |
|
|
|
অর্থনীতির দুই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিন পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের |
|
|
বাংলাদেশের অর্থনীতি দুটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। মূল্যস্ফীতির অব্যাহত উচ্চহার ও বৈদেশিক মুদ্রা মজুদের ক্রমাগত অবক্ষয়। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে মুদ্রা সংকোচন নীতিমালা অব্যাহত রাখতে হবে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটি।
তাই বুধবারের (৮ মে) বৈঠকে মূল্যস্ফীতি কমানো ও রিজার্ভ বাড়াতে তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। এক, বিদেশি মুদ্রা ক্রয়বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করা। দুই, নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো এবং তিন, ঋণের সুদহার নির্ধারণে বর্তমানে যে স্মার্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তা বাতিল করা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির (এমপিসি) বৈঠকে দেশি ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ ও পূর্বাভাস নিয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির বর্তমান পরিস্থিতি, ব্যাংকিং খাতের মুদ্রা ও তারল্য পরিস্থিতি, সুদহার করিডরের অবস্থা, বহিস্থ খাত থেকে আসা চাপ এবং বিনিময় হার পরিস্থিতি নিয়েও এতে আলোচনা হয়।
দুটি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করে এমপিসির বৈঠকে জানানো হয় যে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সরকার মূল্যস্ফীতি কমানো, বিনিময় হার স্থিতিশীল করা ও রিজার্ভের অবক্ষয় রোধে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু তারপরও মূল্যস্ফীতি অনমনীয়ভাবে উঁচুতে রয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ প্রত্যাশিত পর্যায়ে উন্নীত করা যাচ্ছে না।
সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সিদ্ধান্ত হয়, প্রথমতো, বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করবে। এই পদ্ধতির আওতায় ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি হবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা। পুরোপুরি বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর আগপর্যন্ত এই পদ্ধতি বহাল থাকবে।
দ্বিতীয়ত, নীতি সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হবে। বর্তমানে এই হার ৮ শতাংশ, যা সাড়ে ৮ শতাংশ হয়। আর তৃতীয়ত, ঋণের সুদহার নির্ধারণে বর্তমানে যে স্মার্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তা বাতিল হবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের চাহিদা ও সরবরাহ এবং ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদহার নির্ধারণ করবে। এই তিন সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে এমপিসির সভায় জানানো হয়েছে।
গত ১৭ জানুয়ারি এসডিএফ সুদহার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছিল। নীতি সুদহারের ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমার মধ্যে ব্যবধান ১৫০ শতাংশ পয়েন্ট অপরিবর্তিত রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থাৎ নীতি সুদহার সাড়ে ৮ শতাংশের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫০ বেসিস পয়েন্ট যোগ করে এসএলএফ সুদহার ও নিচে ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বিয়োগ করে এসডিএফ সুদহার নির্ধারণ করা হবে।
সুদহারকে বাজারভিত্তিক করার লক্ষ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিতরণকৃত ঋণের ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রযোজ্য রেফারেন্স রেট স্মার্টকে বিলুপ্ত করা হলো। এক্ষণে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ চাহিদা-যোগান এবং ব্যাংকার-গ্রাহকের সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদহার নির্ধারণ করতে পারবে। সিদ্ধান্তসমূহ অবিলম্বে কার্যকর হবে। মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুসৃত সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
তারল্যের প্রয়োজনে বাণিজ্যিক ব্যাংক যখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে, তখন তার সুদহার ঠিক হয় রেপোর মাধ্যমে। আর রিভার্স রেপোর মাধ্যমে বাংকগুলো তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা রাখে বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইলে বাজার থেকে অতিরিক্ত তারল্য তুলে নিতে পারে। এ সময় রিভার্স রোপো সুদহার প্রযোজ্য হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে যে সুদহারে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেয়, তাকে বলে ব্যাংক রেট। এবার ৪ শতাংশের ব্যাংক রেটে পরিবর্তন আনা হয়নি। |
News Source
|
|
|
|
|
|
|
|
Today's Other News
|
Related Stories |
|
|
|
|