[ অনলাইন ] 07/05/2024
 
পরিচালকরা জানেন না কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করছেন
সংকটে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে নবগঠিত পর্ষদের অনেক পরিচালক নিজেরাও জানেন না যে, তারা কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজেদের পরিচয় নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন নতুন পর্ষদ। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক আছে বলে দ্রুত চেয়ারম্যানসহ পরিচালকরা সংবাদ সম্মেলনের স্থান ত্যাগ করেন।

সোমবার বিকালে রাজধানীর বাংলামোটরে ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রধান কার্যলিয়ে নতুন পর্ষদের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এমন ঘটনা ঘটে।

এর আগে বৃহস্পতিবার চাপের মুখে আগের পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ ৪ জন পদত্যাগ করেন। পরে বাধ্য হয়ে ৫ মে নতুন পর্ষদ গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরই বিভিন্ন মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী ব্যাংক দখলে নিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন ডাকে নতুন পর্ষদ। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল আলম খান সূচনা বক্তব্য দেন।

এরপর নতুন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন। সেখানে প্রতিনিধি পরিচালকদের নাম উল্লেখ করা হয়-তারা হলেন ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রতিনিধি পরিচালক লে. জে. মো. সফিকুর রহমান (অব.), প্রতিনিধি পরিচালক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজুল করিম, ব্যবসায়ী ও প্রতিনিধি পরিচালক এরশাদ মাহমুদ, প্রতিনিধি পরিচালক ও বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এহসানুল করিম, প্রতিনিধি পরিচালক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একেএম তফাজ্জল হক।

এছাড়া স্বতন্ত্র পরিচালক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দীন নিজামী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ড. রত্মা দত্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবিএম জহুরুল হুদা।  

এ সময় প্রতিনিধি পরিচালকরা কে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এসেছেন এবং ওই প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের কত শতাংশ শেয়ারের মালিক-সাংবাদিকরা এমন তথ্য জানতে চান। চেয়ারম্যান তাদের পরিচয় দিতে পারেননি। তিনি বলেন, তারা কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি তা লিখিত আছে। সিএফও পরে জানাতে পারবেন।

এরপর উপস্থিত থাকা প্রতিনিধি পরিচালকদের কাছে তাদের পরিচয় ও কোন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি হয়েছেন তা জানতে চাওয়া হলে তারাও তাদের পরিচয় দিতে পারেননি। এ সময়  বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক আছে বলে তড়িঘড়ি করে চেয়ারম্যানসহ পরিচালকরা সংবাদ সম্মেলনের স্থান ত্যাগ করে চলে যান।

যাওয়ার সময় জানতে চাওয়া হয় তাহলে কি বিশেষ কোনো গোষ্ঠী ব্যাংক দখল করেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান জানান, ‘না না এটা মিছা কথা, ব্যাংকটি দখল হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদ প্রাথমিকভাবে ন্যাশনাল ব্যাংকের মূলধনে শেয়ারহোল্ডারদের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা সরবরাহ করবেন। এছাড়া পরে আরও তিন হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করবেন। এতে ন্যাশনাল ব্যাংকের চলমান তারল্য সংকট নিরসন হবে। এছাড়া খারাপ হয়ে যাওয়া ঋণ পুনরুদ্ধারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ঋণখেলাপিকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

এখন ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে ব্যাংকের অনেক টাকা এদিক-সেদিক হয়েছে। পরিচালকদের লুটপাটের কারণে ব্যাংকটি দুর্বল হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা হয়েছে; এখন ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত হবে না।