[ অনলাইন ] 01/11/2024 |
|
|
|
এস আলম আমলে নিয়োগ পাওয়া ৬০০ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত
|
|
|
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার পর এবার তাদের আমলে নিয়োগ পাওয়া অন্তত ৬০০ জন সহকারী কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। নতুন পর্ষদ ব্যাংকটির দায়িত্ব নেওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, ব্যাংকটিতে মোট কর্মকর্তা রয়েছেন চার হাজার ৭৫০ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রামেরই প্রায় দুই হাজার জন। এঁদের সবাইকে পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এ পর্যন্ত ৫৭৯ জনকে পরীক্ষা ছাড়া নিয়োগ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে এ বছর নিয়োগ পান ৫৭০ জন, অন্য ৯ জন গত বছর।
ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এই ৫৭৯ জনকে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। নিয়োগ পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি। সনদ যাচাই-বাছাই ছাড়াই তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাঁদের নিয়ম মেনে নিয়োগ দেওয়া হয়নি, তাই ব্যাংক তাঁদের চাকরিচ্যুত করেছে।
এসআইবিএলের চেয়ারম্যান ড. সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা নিয়মের মধ্যে থেকে সব করছি। এখানে অনিয়ম যেন আর না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। অন্যায়ের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। আগের দিন রাতে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কম্পানি সচিবকে তুলে নিয়ে যায় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা। ব্যাংকটি দখলের পর চেয়ারম্যান করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফকে। বোর্ড ভেঙে দেওয়ার আগে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন বেলাল আহমেদ। তিনি হচ্ছেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের জামাতা।
এসআইবিএলের মালিকানা পরিবর্তনের সময়ই এস আলম গ্রুপ কয়েকজন উদ্যোক্তা ও পরিচালককে বাদ দেয়। এরপর তারা ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ টাকা সরিয়ে নেয়, যে কারণে ব্যাংকটি এরই মধ্যে আর্থিক সংকটে পড়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবেও ঘাটতিতে রয়েছে। এই ব্যাংকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ১১ আগস্ট সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে এস আলম গ্রুপের হাত থেকে মুক্ত করতে মানববন্ধন করেছেন ব্যাংকটির কিছু শেয়ারধারী। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা অভিযোগ করেন, এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলম এবং তাঁর সহযোগীরা আমানতকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকা নামে-বেনামে তুলে পাচার করেছেন। এতে শুধু এসআইবিএল নয়, পুরো আর্থিক খাত হুমকির মুখে পড়েছে। সাধারণ আমানতকারীরা তাঁদের জমাকৃত অর্থ প্রয়োজন অনুযায়ী তুলতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে গত ২৬ আগস্ট আগের পর্ষদ ভেঙে নতুন পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
|
|