[ অনলাইন ] 01/11/2024 |
|
|
|
টিআর-কাবিখার আড়াই কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ
|
|
|
নাজমুল হক, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) থেকে : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার কর্মসূচি প্রকল্পে গত এক অর্থবছরের বরাদ্দকৃত ৪ কোটি টাকার মধ্যে আড়াই কোটি টাকা লোপাট করার ঘটনা ঘটেছে। ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দকৃত এই টাকা লোপাট করেছে। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির (কাবিখা) চাল ও গম, কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা), টেস্ট রিলিপ (টিআর) ও নগদ টাকা লোপাট করা হয়েছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উপজেলা প্রকল্প কার্যালয়ে এমন পুকুর চুরির তথ্য মিলেছে ভোরের কাগজের অনুসন্ধানে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেসকাতুর রহমান কাগজে কলমে প্রকল্প দেখিয়ে ধাপে ধাপে বরাদ্দকৃত নগদ টাকা ও চাল, গম গোপনে আত্মসাৎ করেছে।
জানা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের ২৪ জুন পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে পিআইও অফিসে ২৭ ধাপে টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, চাল ও গম বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রাপ্ত বরাদ্দ উপজেলার উন্নয়ন কাজে খরচ না করে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের ভাগ্য উন্নয়নে খরচ করা হয়। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামীণ রাস্তাঘাট জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর ধরে। এসব রাস্তাঘাট উন্নয়নের নামে বারবার বরাদ্দ দেয়া হলেও কাজ হয় না।
প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, দুর্নীতি অনিয়মের বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কাবিখা-৩) মোহাম্মদ কামাল হোসেন ভোরের কাগজকে বলেন, এসব বিষয় তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক।
বিগত অর্থবছরে সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিসের মাধ্যমে বাস্তবায়িত সব প্রকল্পের তালিকা তথ্য অধিকার আইনের নীতিমালা মেনে ইউএনওর কাছে হলে পিআইও স্বাক্ষরিত ১১ ফর্দের একটি তালিকা সরবরাহ করা হয়। অনুসন্ধানের তালিকার সঙ্গে বাস্তবের বরাদ্দের ব্যাপক অমিল পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তালিকায় ১ কোটি ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯১ নগদ টাকা ও ৬৩ টন খাদ্যশষ্যের বিপরীতে প্রকল্প দেখানো হয় ৭৮টি। সূত্র মতে, বিভিন্ন ধাপে বরাদ্দ দেয়া হয় ৩০৩টি প্রকল্পের বিপরীতে ১৮৩ টন খাদ্যশস্য, যার প্রকৃত বাজার মূল্য ৯১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও নগদ ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৫ হাজার টাকা। এসব বরাদ্দের তথ্য গোপন করে নাম সর্বস্ব প্রকল্প কমিটি করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করে দেন পিআইও মেশকাতুর রহমান।
প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ, তথ্য গোপন করার দায় স্বীকার করে সদ্য সাবেক ইউএনও কানিজ ফাতেমা বলেন, উপজেলার সব মন্ত্রালয়ের দপ্তরের বরাদ্দ ইউএনও বরাবর আসে। কিন্তু প্রাপ্ত বরাদ্দ সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানের দায়িত্বে প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও টাকা খরচ করা। কেউ তথ্য চাইলে তা বিধি মোতাবেক দেয়া আমার দায়িত্ব¡। যদি কেউ তথ্য গোপন করে সেটা অপরাধ। তবে গত অর্থ বছরের শেষের দিকের প্রায় ২২ লাখ টাকা মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়।
এসব অনিয়মের ঘটনা অস্বীকার করে পিআইও মেশকাতুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, চাহিদা মতো সব তথ্য দেয়া হয়েছে। কোনো তথ্য গোপন করা হয়নি। সব পিআইও অফিসে কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে। |
|