[ অনলাইন ] 14/07/2025
 
বৃত্তি জালিয়াতি করা সেই শিক্ষা কর্মকর্তা বরখাস্ত
নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে ৪০ শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি পাইয়ে দেওয়া রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রাখি চক্রবর্তীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে চলা মামলা ১০ বছর পর নিষ্পত্তি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। রাখি চক্রবর্তীকে ‘গুরুতর দণ্ড’ হিসেবে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম আনোয়ার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আদেশে বলা হয়, বিভাগীয় মামলায় রাখি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আনা অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার সাময়িক বরখাস্তের আগের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, রাখি চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছিল। পাশাপাশি দুদকের দায়ের করা একটি মামলাও আদালতে বিচারাধীন। গত ২ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্ত ও শৃঙ্খলা শাখা থেকে তার বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়, যা বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) আমরা হাতে পেয়েছি।

অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর নম্বর বাড়িয়ে মেধাবৃত্তি পাইয়ে দেন তৎকালীন জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা। বিষয়টি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সবাই। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দুদকের রাজশাহীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ মহানগরের রাজপাড়ায় থানায় মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় গ্রেফতার হন প্রধান আসামি তৎকালীন রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেম। সে সময় আত্মগোপনে চলে যান মামলার অন্য দুই আসামি তৎকালীন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাখি চক্রবর্তী ও কম্পিউটার অপারেটর সোনিয়া খাতুন।

পরে তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। এরপর ২০১৬ সালে রাখী চক্রবর্তীকে গোদাগাড়ী উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। একইসঙ্গে চলে তদন্ত কার্যক্রম। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।

মামলায় প্রথমে তৎকালীন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কাশেমকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় এবং কর্মচারী সোনিয়া রওশনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এবার তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রাখি চক্রবর্তীকে চাকরি থেকে অপসারণ করল অধিদফতর।