Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
গ্যাসসংকটে শিল্পায়নে গতি নেই [ অনলাইন ] 18/04/2024
গ্যাসসংকটে শিল্পায়নে গতি নেই
শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত খুলনায় একসময় অনেক জুট মিল গড়ে উঠেছিল। কিন্তু কালের আবর্তে একে একে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়ে খুলনা। খুলনা ছেড়ে মানুষ ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকায় কাজের খোঁজে গেছে। কিন্তু নতুন সম্ভাবনা জাগায় পদ্মা সেতু। সবার আশা ছিল, পদ্মা সেতুর কারণে এই অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়বে। কর্মসংস্থানের গতি বাড়ার পাশাপাশি আয়ের বৈষম্যও কমে যাবে। আবার ফিরতে শুরু করবে মানুষ। তবে প্রত্যাশিতভাবে গড়ে উঠছে না শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সাইনবোর্ড দেখা গেলেও গড়ে উঠছে না বড় শিল্পের অবকাঠামো। নেই বিদেশি বিনিয়োগও। আট বছরে মাত্র ২০৭টি ছোট ও মাঝারিশিল্প গড়ে উঠেছে। শিল্পগুলোতে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ২০ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত গ্যাস না থাকার কারণেই বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না।

বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন (বিজেএমসি) জানায়, ক্রমাগত লোকসানের কারণে খুলনা বিভাগে অসংখ্য রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কল-কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের জুলাইয়ে খুলনা অঞ্চলের ৯টিসহ দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ কার্যকর করে সরকার। পাটকল বন্ধসহ গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় শ্রমিকদের অবসায়নের প্রজ্ঞাপন খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি জুট মিলের নোটিস বোর্ডে টানিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ হওয়া ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল হচ্ছে ক্রিসেন্ট জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, স্টার জুট মিল, ইস্টার্ন জুট মিল, আলিম জুট মিল, জেজেআই জুট মিল ও কার্পেটিং জুট মিল। মিলগুলো বন্ধ ঘোষণায় চাকরি হারান স্থায়ী-অস্থায়ী প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক। যদিও ২০২১ সালের এপ্রিলে সরকার পাটকলগুলোকে বেসরকারি খাতে ৫ থেকে ৩০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইজারার মাধ্যমে পেয়ে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে সীমিত পরিসরে দৌলতপুর জুট মিলে উৎপাদন শুরু করে ফরচুন গ্রুপ। একই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে জেজেআই জুট মিলে উৎপাদন করছে আকিজ গ্রুপ। অন্য পাটকলগুলোর মধ্যে ভারতের মোহন গ্রুপের কাছে হস্তান্তর হয়েছে যশোর কার্পেটিং জুট মিল, রেডিয়েন্ট গ্রুপের কাছে হস্তান্তরের অপেক্ষায় খালিশপুর জুট মিল।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের খুলনা সম্পাদক ও পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সভাপতি কুদরত-ই-খুদা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ইজারা দেওয়া হলেও ইজারা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো উৎপাদনের যাচ্ছে না। তারা লোকদেখানো উৎপাদন করছে। এতে উদ্দেশ্য সফল হবে না। ইজারা নেওয়ার নামে প্রতিষ্ঠান জায়গা দখল করছে এবং লোন নিয়ে ব্যাংক লুট করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তবে বিভাগীয় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, খুলনা বিভাগীয় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের কাছ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৭টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ১ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩৪টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ১ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২২টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ১১ হাজার ২২০ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ১ হাজার ২১৬ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ১ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৩টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ১ হাজার ৪৯ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৭টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ৭৫৭ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (জানুয়ারি পর্যন্ত) ১৩টি নতুন শিল্প কল-কারখানার নিবন্ধন করা হয়। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয় ১ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।

খুলনা বিভাগীয় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের (বিডা) পরিচালক প্রণব কুমার রায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলেও খুলনা বিভাগে প্রত্যাশা অনুযায়ী শিল্প গড়ে উঠছে না। প্রতি মাসে তিন থেকে চারটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নিচ্ছে, যা এ অঞ্চলের জন্য যথেষ্ট না।

কী ধরনের শিল্প নিবন্ধন নিচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছোট ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব শিল্পে সাধারণত ৫ থেকে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ হয়। তবে খুলনা-মাওয়া, খুলনা-মোংলা ও খুলনা-সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়কের পাশে খালি জমিতে অনেক সাইনবোর্ড দেখা যায়। সুতরাং বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে করবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আরও সময় লাগবে বলে তার অভিমত।

পদ্মা সেতু চালুর পরও কেন ভারীশিল্প বা বিনিয়োগ বাড়ছে না এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের খুলনা সম্পাদক ও পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সভাপতি কুদরত-ই-খুদা দেশ রূপান্তরকে বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে টিকে থাকতে ব্যবসায়ীরা উৎপাদন খরচ কমানোর দিকে গুরুত্ব দেন। উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। আর উৎপাদন খরচ কমাতে হলে গ্যাসের বিকল্প নেই। কিন্তু খুলনায় গ্যাস নেই। দক্ষিণাঞ্চলে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ এখনো পরিকল্পনায় সীমাবদ্ধ। নেই ব্যবসা-সহায়ক পরিবেশ ও উন্নত সড়কব্যবস্থা। এ ছাড়া এ অঞ্চলের মানুষের ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি কম। সে কারণে কাক্সিক্ষত শিল্প ও বিনিয়োগ বাড়ছে না। বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠছে না।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশকে ১২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি
• বাড়ল জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম
• বেসরকারি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ঋণ দিচ্ছে এডিবি
• বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ল
• পরীক্ষামূলকভাবে রূপপুরের বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু
• ডিজেলের দাম লিটারে বাড়ল এক টাকা, পেট্রল ও অকটেন আড়াই টাকা
• দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন রেকর্ড
• রূপপুর-বগুড়া গ্রিড লাইনে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সঞ্চালন
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved