Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
কিলার বাদলের ইশারায় চলে অপরাধজগৎ! [ পাতা ৩ ] 26/04/2024
মোহাম্মদপুরে চাঁদাবাজ-দখলবাজ সিন্ডিকেট
কিলার বাদলের ইশারায় চলে অপরাধজগৎ!
শখানেক মামলার আসামি হয়েও অধরা * ডিশ ব্যবসায়ী ইকবালকে হত্যার মধ্য দিয়ে কিলিং মিশন শুরু
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী বাদল ওরফে কিলার বাদলের নেতৃত্বে এলাকায় বেশ কয়েকটি ভয়ংকর কিশোর গ্যাং চক্র গড়ে উঠছে। তার নির্দেশে এ চক্রের সদস্যরা মোহাম্মদপুরজুড়ে ছিনতাই, মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির আধিপত্য বিস্তার করেছে। পুলিশের তথ্যমতে, কিলার বাদলের বিরুদ্ধে খুন, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ অন্তত শখানেক মামলা রয়েছে। তার অন্যতম সহযোগী হিসাবে লালু উদ্দিন লালু অন্যতম। বাদলের নির্দেশে লালু কিশোর গ্যাং সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করেন।

স্থানীয়দের মতে, বর্তমানে কিলার বাদলকে কেউ না দেখলেও তার ইশারায় পুরো মোহাম্মদপুরের অপরাধজগৎ চলে। তার হাতিয়ার হিসাবে কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ভূমি দখল ও হামলাসহ ভয়ংকর কাজ করছে। সড়ক ও ফুটপাত দখল করে দোকানপাট বসিয়ে টাকা আদায়, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে অথবা জমি দখলে বাধা দিলে কুপিয়ে হত্যা আবার কখনো গুরুতর আহত করা হয়। বাদলের ভয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা মুখ খুলতে সাহস পান না। তার হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে সহযোগী লাল্লু, ইমন ওরফে জুট ইমন, ঘাট বাবু, গ্যারেজ সোহেল, বাত রাসেল, মাহিসহ অনেকে। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণের মামলা রয়েছে। বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত বাদলের সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ১৯৯৯ সালে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী হিসাবে বাদলের পথচলা শুরু। কাঁটাসুরের এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী এনআইয়ের হাত ধরে তার অপরাধ জগতে প্রবেশ। ডিশ ব্যবসায়ী ইকবালকে হত্যার মধ্য দিয়ে কিশোর বয়সেই বাদলের কিলিং মিশন শুরু হয়। এরপর কাঁটাসুরের বাবুল হত্যার মধ্য দিয়ে বাদল থেকে কিলার বাদল হিসাবে স্থানীয়দের কাছে সে পরিচিতি লাভ করে। ২০০২ সালে কমিশনার রাজু হত্যা ও মোহাম্মদপুরে ডাবল মার্ডারের (বস্তাবন্দি জোড়া লাশ) ঘটনায় বাদল সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। এরপর বাদল পেশাদার কিলার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর কাঁটাসুর এলাকায় ব্রাশফায়ারে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর মিরপুর থেকে অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাদল কারাবন্দি ছিল। দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকার সুবাদে বিভিন্ন শীর্ষ ও মধ্যম সারির সন্ত্রাসীদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মোহাম্মদপুর এলাকার তিন রাস্তার মোড়ে লেগুনা থেকে চাঁদা তোলার কাজ করত লেগুনার লাইনম্যান নবী হোসেন। চাঁদা ও এলাকার আধিপত্য নিয়ে রাসেল ও কিলার বাদল অনুসারী মাহি গ্রুপের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত বছরের ৪ এপ্রিল লাইনম্যান নবী হোসেন নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন তুরাগ নদী থেকে তার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। নবীর স্বজনরা জানান, নবী ছিলেন রাসেল গ্রুপের সদস্য। যদিও পুলিশ বলছে, নারীঘটিত কারণে পরিকল্পিতভাবে নবীকে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

যারা নিয়ন্ত্রণ করে বাদলের সাম্রাজ্য : মোহাম্মদপুরের তিন রাস্তা মোড় এলাকায় জসিম, তিন রাস্তা মোড় থেকে আল্লাহ করীম মসজিদ পর্যন্ত সালাম ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ করে বাদলের মূল সহযোগী লালু উদ্দিন লাল্লু। বাদলের ১৫-১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা লালু আধিপত্য বিস্তার করছে। কিশোর গ্যাং নেটওয়ার্কের মূল সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করে সোহেল ওরফে গ্যারেজ সোহেল। গ্যাংগুলোর প্রধান হিসাবে কাজ করে ইমন ওরফে জুট ইমন। আইনি ঝামেলা এড়িয়ে বাদলের সব টাকা-পয়সার দেখভালের দায়িত্ব পালন করেন ইমন। বাদলের বিনিয়োগ করা টাকায় মোহাম্মদপুরের গার্মেন্টগুলোতে ঝুট ব্যবসা করে ইমন। মোহাম্মদপুর এলাকার ১৩টি কিশোর গ্যাং গ্রুপ ইমন ওরফে ঝুট ইমনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চাঁদ-উদ্যান এলাকায় গড়ে ওঠা ইমনের অফিস থেকে গ্রুপগুলো পরিচালনা করা হয়। র‌্যাব অফিসের কয়েক গজের মধ্যে চাঁদ-উদ্যান এলাকায় প্রতিদিনই চলে কিশোর গ্যাংয়ের গ্রুপগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া।

ঝুট ইমনের সহায়তায় মোহাম্মদপুর কাঁটাসুর এলাকায় সাজ্জাদ ও চাঁদ-উদ্যান এলাকায় মাহি কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে। মোহাম্মদপুর ও বসিলা এলাকাজুড়ে খেলার মাঠ বা খালি জায়গা দখল করে প্রতি সপ্তাহে বেশ কয়েকটি মেলা বসানো হয়। এসব মেলা থেকে চাঁদা উঠানোসহ সবকিছু দেখভালের দায়িত্ব পান করে ইমন। জানা যায়, পুলিশ, র‌্যাব ও অন্য সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ইমন ওরফে ঝুট ইমনের বিশেষ সখ্য রয়েছে। এ বিশেষ সখ্যের কারণে কিশোর গ্যাং সদস্যদের মারামারিতে কেউ বাধা দিলে তার ওপর নেমে আসে মামলাসহ নানা রকম হয়রানি। মোহাম্মদপুরের এক সময়ের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সুমন ওরফে কাইল্যা সুমন। সুমন কিলার বাদলের ভাই ও অন্যতম সহযোগী। বাদলের অন্যতম সহযোগী তাজেল গাজীও সুমনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। হত্যা, চুরি, ডাকাতি এবং ছিনতাইসহ বিভিন্ন মামলায় সুমন ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত কারাভোগ করেছে। বাদলের মাদক ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক রনি ওরফে ভাগিনা রনি। ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিন হার্ট অভিযানে সাতটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ রনি গ্রেফতার হয়। কারাগারে থাকা অবস্থায় কিলার বাদলের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এরপর জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কিলার বাদলের অন্যতম সহযোগী হিসাবে কাজ শুরু করে। এছাড়া মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় বাদলের দখলবাজ একাধিক গ্রুপ রয়েছে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঞা জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের প্রতিনিয়ত আটক করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এর পেছনে যারা রয়েছে-তাদেরও আটকের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। বাদল ওরফে কিলার বাদলের নাম শুনেছি। আমরা ক্রমান্বয়ে সব অপরাধীকে আটক করতে কাজ করছি।
News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• বিল তুলতে জালিয়াতি
• প্রতারণার টাকায় সাততলা বাড়ি
• সরকার কেন হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটকারীদের ধরছে না
• টাকা পাচারের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্য ব্যাংকের অবস্থা খুবই করুণ: অলি
• ব্যাংক কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা ছাড়া মানি লন্ডারিং সম্ভব নয়
• কক্সবাজারে মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে এনজিওগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান
• ডাকাত দলের নারী সদস্যসহ গ্রেফতার ১২, অস্ত্র উদ্ধার
• মাদককারবারিসহ তিন জেলায় গ্রেপ্তার ১৪
• ওমরাহ হজে পাঠানোর কথা বলে কোটি টাকা আত্মসাৎ, আটক ২
• নকল ওরস্যালাইনসহ গ্রেপ্তার তিন
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved