Hawkerbd.com     SINCE
 
 
 
 
 আগামী অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ লক্ষ্যমাত্রা ১৬ হাজার কোটি টাকা [ অনলাইন ] 25/04/2024
সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়া ‘শূন্যে’ নামানোর উদ্যোগ
আগামী অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ লক্ষ্যমাত্রা ১৬ হাজার কোটি টাকা
সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ‘শূন্যে’ নামিয়ে আনতে চায় সরকার। মূলত সুদ ব্যয় কমানো এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এর ফলে আগামী অর্থবছরে এই খাত থেকে ঋণ নেয়ার পরিধি আরো কমিয়ে ধরা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২০২৪) সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরা রয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। সেখানে আগামী অর্থবছরে (২০২৪-২০২৫) তা কমিয়ে ১৬ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনার প্রাক্কলন করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ অনেক ব্যয়বহুল ঋণ। এখানে সর্বোচ্চ সুদই রয়েছে ১২ শতাংশের ওপরে। তাই বেশ কয়েক বছর ধরে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনছে। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সঞ্চয়পত্র কেনার ওপর নানা শর্ত আরোপ করা হয়েছে। যেমন এখন পাঁচ লাখ টাকার ওপরে এ খাতে কেউ বিনিয়োগ করতে চাইলে তাকে অবশ্যই ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এই জন্য অনেকে আর নতুন করে এ খাতে বিনিয়োগ করছে না। একই সাথে মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণেও অনেক বিনিয়োগকারী সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে ফেলছেন। এ অর্থ তারা সংসারের কাজে ব্যয় করছেন। ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি অনেকটা অর্ধেকে নেমে গেছে। তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পরিপালন করতেও সরকারকে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। আগামী কয়েক বছরে এটি থেকে আমরা ঋণ নেয়ার পরিমাণ প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনতে চাই।

এ দিকে সঞ্চয়পত্র থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে এর নিট (প্রকৃত) বিক্রি নেতিবাচক হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাস (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির ঋণাত্মক পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ঋণাত্মকের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। ঋণাত্মক হওয়ার অর্থ হচ্ছে, এখন আর সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নিতে হচ্ছে না। ফলে এ খাতে সরকারকে ঋণের সুদও গুনতে হবে না। তবে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ পরিশোধের বিপরীতে সরকারকে এখনো বাজেটে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে। যেমন চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪০ হাজার ২০ কোটি টাকা।

সাধারণ মানুষ আর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না কারণ মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের হাতে সঞ্চয় করার মতো কোনো অর্থই আর অবশিষ্ট থাকছে না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে দেশে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। গত বছরের মার্চে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ শতাংশ অতিক্রমের পর তা আর কোনো মাসেই ৯ শতাংশের নিচে নামেনি। অর্থাৎ ১৩ মাস ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। বেসরকারি হিসেবে এই মূল্যস্ফীতি এখন ২০ শতাংশের কাছাকাছি বলে মনে করা হচ্ছে।

আর যাদের হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকছে তারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ না করে ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ করছে। অনেক বেসরকারি ব্যাংক এ বছর মেয়াদি হিসেবে ১০ থেকে ১১ শতাংশ মুনাফা দিচ্ছে। এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে, বিনিয়োগকারীরা। আর ‘স্মার্ট’ বিনিয়োগকারী সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন। এখানে সুদের হার সাড়ে ১১ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে।

এ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ২০২৩ সালের এপ্রিলে সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। চলতি এপ্রিলে এই ঋণের পরিমাণ মাত্র ২১৪ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭১৪ কোটি টাকা।

গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে গ্রাহকদের মূল টাকা (বিনিয়োগ) ও মুনাফা (সুদ) বাবদ পরিশোধ করা হয় ৮৮ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। অর্থবছর শেষে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর এ খাতে সরকারের নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৯১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৫২ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা।

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরেছিল। সে হিসাবে দেখা যায়, গত অর্থবছরে লক্ষ্যের চেয়ে এই খাত থেকে ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ কম ঋণ নিয়েছিল সরকার।

২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ১ লাখ ১২ হাজার ১৮৮ কোটি ২৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল বাবদ ৭০ হাজার ২২৯ কোটি টাকা গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়। সে হিসাবে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছিল ২০১৬-১৭ অর্থবছরে, ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।

News Source
 
 
 
 
Today's Other News
• ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প ঝুঁকিতে
• ডিজিটালাইজেশনে হিমশিম
• কৃষি খাতে ভর্তুকি বেড়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা
• দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে না
• দেশে মূল্যস্ফীতির তুলনায় মজুরি বৃদ্ধির হার কম
• স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ আরো কমেছে
• সুদ ও ভর্তুকিতে বাজেটের এক-তৃতীয়াংশ খরচ
• পণ্য রপ্তানির অর্থ আসা কমেছে
• রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রায় পিছিয়ে তৈরি পোশাক খাত
• গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে আরো দুই ধাপ পেছাল বাংলাদেশ
More
Related Stories
 
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
Forward to Friend Print Close Add to Archive Personal Archive  
 
 
Home / About Us / Benifits / Invite a Friend / Policy
Copyright © Hawker 2013-2012, Allright Reserved